ফাউমি মুরগির ডিম উৎপাদন সময় ও পরিচর্যা টিপস

ফাউমি মুরগি কত দিনে ডিম দেয় সে সম্পর্কে অবগত আছেন? নিয়মিত এই ডিম খাওয়ার ফলে স্বাস্থ্যের উপর কি প্রভাব পড়ছে, পুষ্টিগুণের ঘাটতি, ফাউমি মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা এবং ফাউমি মুরগির খাবার তালিকা সে সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুন।
ফাউমি মুরগি কত দিনে ডিম দেয়
আপনি কি আপনার খাদ্য তালিকায় ফাউমি মুরগির ডিম যুক্ত করতে আগ্রহী ? আজকের আলোচনা আপনাকে অনেক বেশি সাহায্য করবে ফাউমি মুরগি কত দিনে ডিম দেয়, কোন মুরগির ডিমে পুষ্টি বেশি এবং ফাউমি মুরগির বাচ্চা চেনার উপায়,ফাউমি মুরগি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে জানার। সচেতন হয়ে সঠিক খাদ্যাভাস গড়ে তুলুন। 

পোস্ট সূচিপত্রঃ ফাউমি মুরগি কত দিনে ডিম দেয়/ফাউমি মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা

ফাউমি জাতের মুরগির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

ফাউমি জাতের মুরগির ইতিহাস বেশ সমৃদ্ধ এবং দীর্ঘ। এটি একটি প্রাচীন জাত হিসেবে পরিচিত এবং এর উৎপত্তি ও বিবর্তনের পেছনে রয়েছে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট। ফাউমি মুরগি কত দিনে ডিম দেয়, ফাউমি মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা এবং ফাউমি মুরগির খাবার তালিকা সম্পর্কে আলোচনা করব। তবে এ সকল বিষয় জানার আগে চলুন ফাউমি জাতের মুরগির ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা জেনে নেয়া যাক-

উৎপত্তি স্থানঃ ফাউমি জাতের মুরগির উৎপত্তি হয়েছে মিশরের ফাইয়ুম নামক অঞ্চলে।
ফাইয়ুম একটি প্রাচীন অঞ্চল যা কাইরোর দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থিত এবং খ্রিস্টপূর্ব যুগ থেকে এটি একটি জনবসতিপূর্ণ এবং চাষাবাদ সমৃদ্ধ এলাকা।

প্রাচীন জাতঃ ফাউমি মুরগিকে একটি প্রাকৃতিকভাবে গঠিত প্রাচীন জাত হিসেবে ধরা হয়। ধারণা করা হয় হাজার বছর আগে থেকে মিশরের গ্রামীণ পরিবারগুলো এই জাতের মুরগি পালন করত ডিম ও মাংস উৎপাদনের জন্য। দীর্ঘকাল ধরে গ্রামীণ কৃষকদের মাধ্যমে সংরক্ষিত হয়ে এসেছে এবং আধুনিক খামার ব্যবস্থাপনায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এর দ্রুত ডিম উৎপাদন রোগ প্রতিরোধ এবং পরিবেশ সহনশীলতার কারণে।

অভিযোজন ক্ষমতাঃ ফাউমি মুরগি উষ্ণ ও শুষ্ক আবহাওয়ার জন্য খুব উপযোগী কারণ এটি মিশরের মরু অঞ্চলের প্রকৃতিতে বেড়ে উঠেছে। এর অভিযোজন ক্ষমতা অনেক বেশি বিশেষ করে কম খরচেও খোলা জায়গায় পালন উপযোগী।

বৈশিষ্ট্যগত ইতিহাসঃ ফাউমি মুরগি অল্প বয়সে ডিম দেওয়া বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত। এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এটিকে টিকে থাকতে সহায়তা করেছে।

আধুনিক বিস্তারঃ ১৯৪০ এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা হয় গবেষণা ও প্রজনন উন্নয়নের জন্য এই ফাউমি মুরগি। পরে এটি অন্যান্য দেশে যেমন বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান সহ দক্ষিণ এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে এটি দেশি জাতের উন্নত বিকল্প হিসেবে খামারীরা গ্রহণ করছে।

ফাউমি মুরগি কত দিনে ডিম দেয়

ফাউমি মুরগি কত দিনে ডিম দেয় তা জানেন কি? মুরগি এক ধরনের গৃহপালিত পাখি, যার ডিম এবং মাংস মানুষের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। মুরগি পালন করা হয়ে থাকে ডিম, মাংস, মোরগ লড়াই এবং পুষ্টির জন্য। বর্তমানে মুরগি পালন করার বিভিন্ন আধুনিক পদ্ধতি রয়েছে। এই উন্নত পদ্ধতিতে মুরগি পালনের ফলে মুরগির মৃত্যুর হার অনেকাংশে কমে এসেছে এবং খাদ্য ব্যবস্থাপনা রোগ নির্ণয় করা সহজ হয়ে গিয়েছেন। 

তাই মুরগির থেকে আশানুরূপ ডিম পাওয়ার জন্য ভালো মুরগির ঘর তৈরি করতে হবে এবং ভালো মানের মুরগি নির্বাচন করাও অত্যন্ত জরুরি একটি বিষয়।ফাউমি  মুরগি একটি মিশরীয় জাতের দেশি মুরগি। ভালো ডিম দেয়া মুরগির জাত গুলোর মধ্যে ফাউমি  মুরগি বেশ খ্যাত। এরা সাধারণত দেশি মুরগি গুলোর মতই আকারে ছোট সাদা রঙের ডিম দেয়। 

খোসা মজবুত এবং সাধারণত হালকা বাদামি রঙের হয়। ফাওমি মুরগিগুলো সাধারণত ডিমে তা দেয় না। তবে মুরগির বয়স যখন ২ বছর হয় তখন থেকে ডিমে তা দেওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। এ সকল মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হয় যার কারণে সহজে কোন রোগে আক্রান্ত হতে দেখা যায় না। দেশি মুরগির ডিমের মতই ফাউমি মুরগির ডিম অত্যন্ত সুস্বাদু হয়। 

ফাউমি মুরগি বিরতিহীন ভাবে ডিম দিয়ে থাকে তাই এই মুরগিকে ডিমের রানী বলা হয়ে থাকে। ফাউমি মুরগি সাধারণত সোনালি মুরগির থেকে দেরিতে ডিম পারা শুরু করে। তবে এরা দীর্ঘদিন ভাবে একটানা ডিম পাড়ে। ফাউমি মুরগি 5 থেকে সাড়ে পাঁচ মাস বয়সে ডিম দেয়। তবে কিছু কিছু ফাউমি মুরগি রয়েছে যাদের ডিম দিতে কিছুটা সময় লাগে। 

একটি ফাউমি মুরগি বছরে 250-280টি ডিম দেয়ার ক্ষমতা রাখে। তবে বিশেষ যত্ন নিলে এই জাতের মুরগি আরও বেশি ডিম দিতে পারে। দেশীয় যেকোন জাতের মুরগির থেকে এই মুরগি অনেক ডিম দেয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে এই সংখ্যা মুরগির প্রজনন ক্ষমতা, পরিবেশ এবং খাদ্যের উপর নির্ভর করে। সুতরাং বোঝা যাচ্ছে এটি বিভিন্ন পরিস্থিতি ভেদে পরিবর্তন হতে পারে।

ফাউমি মুরগির খাবার তালিকা

ফাউমি মুরগির খাবার তালিকা জানা অত্যন্ত জরুরি আপনি যদি একজন খামারি হন বা হতে চান। কেননা অনেক মানুষ রয়েছে যারা ফাউমি মুরগির খাবার তালিকা সম্পর্কে না জানার কারণে খুব একটা লাভবান হতে পারে না। উল্টে দেখা যায় এই মুরগি পালনের কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। ফাউমি মুরগি থেকে যদি বেশি ডিম পেতে চান এবং মুরগির  দ্রুত বৃদ্ধির জন্য ফাউমি মুরগির খাবারের দিকে বিশেষ নজর দিয়ে সুষম খাদ্য দিতে হবে। 
ফাউমি মুরগির খাবার তালিকা
সাধারণভাবে লেয়ার মুরগির খাবার খাওয়ানো হয়ে থাকে ফাউমি মুরগিকে। আপনি যদি কম পরিসরে ফাউমি মুরগি পালন করতে চান তাহলে সে মুরগি গুলোর মতই সব ধরনের খাবারই আপনি ফাওমি মুরগিকে খাওয়াতে পারবেন। এছাড়াও এই মুরগিগুলো ভুট্টা, চাল, এমনকি বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি খেতে পছন্দ করে। 

কিন্তু আপনার ইচ্ছা যদি থাকে বড় পরিসরে বাণিজ্যিকভাবে ফাওমি মুরগি পালন করার তাহলে অবশ্যই ফাওমি মুরগির খাবার তালিকা দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। নিচে ফাউমি মুরগির খাবার তালিকা তুলে ধরা হলো-
প্রাথমিক খাবার (চিকেন জন্য)ঃ প্রথম ০-২১ দিন- 
    • স্টার্টার ফিডঃ এই সময়টাতে মুরগির জন্য প্রোটিন এবং শক্তিপূর্ণ খাবার প্রয়োজন।
    • প্রোটিনঃ ২০-২৪% ফাউমি চিকের জন্য প্রোটিন প্রয়োজন বেশি।
    • উপাদানঃ ভিটামিন মিনারেল এবং হজম সহায়ক উপাদান।
    • খাবারের ধরনঃ ছোট্র গ্রানুল বা মিক্সড ফিড যাতে ছোট মুরগি সহজে খেতে পারে।
বিকাশ কালীন খাবারঃ ২১-৪৫ দিন-
    • গ্রোয়ার ফিডঃ এই সময় মুরগির বৃদ্ধির জন্য প্রোটিন এবং পুষ্টি উপাদানের সঠিক মিশ্রণ প্রয়োজন।
    • প্রোটিনঃ ১৬-১৮%
    • খাবারের ধরনঃ মাঝারি সাইজের গ্রানুল যাতে মুরগির দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
    • উপাদানঃ ভিটামিন মিনারেল ক্যালসিয়াম ফসফরাস।
ডিম উৎপাদনকারী খাবারঃ ৪৫ দিন বয়সের পর-
    • লেয়ার ফিডঃ এই সময় ফাউমি মুরগি ডিম উৎপাদন শুরু করে। তাই তাদের খাবারে ক্যালসিয়াম ফসফরাস এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান নিশ্চিত করতে হবে।
    • প্রোটিনঃ ১৪-১৬%
    • উপাদানঃ ক্যালসিয়াম(ডিমের খোল তৈরির জন্য), ভিটামিন ডি (ক্যালসিয়ামের শোষণ নিশ্চিত করতে), ফসফরাস (শক্তি এবং হাড়ের জন্য)।
    • খাবারের ধরনঃ বড় গ্রানুল বা চিপস।
প্রাকৃতিক খাবারঃ ফাউমি মুরগির খাবারে কিছু প্রাকৃতিক উপাদান সংযুক্ত করা যেতে পারে যেমন
    • প্রাকৃতিক শস্য যেমন চাল ও ধান যা মুরগির শক্তির জন্য উপকারী
    • ভুট্টা শক্তির উৎস হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
    • সবুজ ঘাস ও সিট মুরগির জন্য পুষ্টিকর এবং প্রাকৃতিক খাবার।
    • ডাল ও শাকসবজি প্রোটিন ও ভিটামিনের ভালো উৎসব মুরগির স্বাস্থ্য ও বৃদ্ধি উন্নত করতে সহায়ক।
    • ক্যাবেজঃ পুষ্টি ও ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস বিশেষ করে শীতকালে।
পানি ও অন্যান্য উপাদানঃ
    • ফাউমি মুরগির জন্য বিশুদ্ধ পানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পানি প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে সরবরাহ করতে হবে।
    • খাবারের সাথে ভিটামিন ও মিনারেল মিক্সচার এবং যেতে পারে।
খাবারের সময়সূচীঃ
    • প্রথম তিন সপ্তাহঃ দিনে ৩ থেকে ৪ বার খাবার দিতে হবে। প্রতিবার ছোট পরিমাণে খাবার দিলে মুরগির সহজে খেতে পারে।
    • পরবর্তী সময়ঃ দিনে ২ বার খাবার দেওয়া যেতে পারে, তবে খাবার পরিষ্কার এবং সঠিক পরিমাণে হওয়া উচিত।
সাধারণ খাবারের মিশ্রণঃ
    • ধান, ভুট্টা, সয়াবিন এবং ডালঃ মুরগির স্বাস্থ্যের জন্য একটি ভালো মিশ্রণ।
    • সবুজ শাকসবজি গাজর এবং অন্যান্য পুষ্টিকর খাবারঃ বিশেষ করে ফাউমি মুরগির খাদ্য তালিকায় নানা ধরনের প্রাকৃতিক খাবার দেয়া উচিত যাতে তারা সব ধরনের পুষ্টি উপাদান পাই।
খাবারের বিশেষ দিকঃ
    • ফাউমি মুরগি সাধারণত পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে চলে তাই তাদের খাবারের মধ্যে প্রাকৃতিক উপাদান যেন বেশি থাকে তার দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
    • খাবারের সঙ্গে ক্যালসিয়াম ও মিনারেল উপাদান যোগ করতে হবে বিশেষ করে যখন তারা ডিম দেয়।
সকল বয়সের মুরগির জন্য খাবারের পরিমাণ বা খাবারের তালিকায় একই রকম হবে তা কিন্তু নয়। বয়স অনুযায়ী ফাউমি মুরগির খাবারের পরিমাণ কম বেশি হতে পারে। তাই বুঝেশুনে নিজের ধারণা থেকে খাবার দেয়া জরুরী।

ফাউমি মুরগির বাচ্চা চেনার উপায়

ফাউমি মুরগির বাচ্চা চেনার উপায়। ফাউমি মুরগি কত দিনে ডিম দেয় সে সম্পর্কে জানলাম তবে আমাদের লাভজনক ফাউমি মুরগি পালন করার জন্য ফাউমি মুরগির বাচ্চা চেনা অত্যন্ত জরুরী। ফাউমি মুরগি বেশ সহিষ্ণু একটি জাত। বাংলাদেশের গরম আবহাওয়ার জন্য একটি উপযুক্ত জাত হতে পারে ফাউমি মুরগি। ফাউমি মুরগির মাংস অত্যন্ত সুস্বাদু হয়। তবে আমাদের মধ্যে অনেকে রয়েছেন যারা সঠিকভাবে ফাউমি মুরগি চেনেন না। 

তাই আপনারা ফাওমি মুরগি কিনতে গিয়ে যেন প্রতারিত না হন তাই আপনাদের মাঝে ফাওমি মুরগির বাচ্চা চেনার উপায় নিয়ে কিছু উপায় সম্পর্কে বলবো- ফাউমি মুরগির বাচ্চা চেনার কিছু নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য আছে যা তাদের জন্য অন্য জাতের মুরগির বাচ্চা থেকে আলাদা করে।

গায়ের রং ও পালকঃ 
    • শাওমি বাচ্চার শরীর সাধারণত হালকা বাদামি বা ছাই রংয়ের হয়ে থাকে।
    • গায়ে ছোট ছোট ডোরাকাটা বা ছোপ ছোপ দাগ দেখা যায় যা বড় হওয়ার সঙ্গে আরও স্পষ্ট হয়।
    • পালক ওঠা শুরু করলে ধূসর বাদামী ও সাদা মিশ্রিত রঙ দেখা যায়।
চোখ ও মুখ মন্ডলঃ
    • চোখ উজ্জ্বল ও সজীব থাকে।
    • ঠোট তুলনামূলকভাবে ছোট এবং হালকা রঙের হয়।
পা ও নখঃ
    • পা সাধারণত হালকা হ্লুদাভ ধূসর রঙের হয়।
    • নখ সরু ও মাঝারি লম্বা হয়।
আচরণগত বৈশিষ্ট্যঃ
    • ফাউমি জাতের বাচ্চা খুব সতর্ক চঞ্চল ও সজাগ প্রকৃতির।
    • হালকা শব্দ বা নড়াচড়া দেখলেই সাড়া দেয় বা দৌড় দেয়।
    • এরা সাধারণত তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাই নতুন পরিবেশে।
    • এই মুরগি শিকারি প্রাণীর থেকে রক্ষা পেতে খুব দ্রুত পালাতে সক্ষম এবং একটানা চলাচল করতে পছন্দ করে।
ওজন ও বৃদ্ধিঃ
    • বাচ্চা তুলনামূলকভাবে হালকা ওজনের হয়। ফাউমি মুরগি তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী এবং কম খাবারে ভালো বৃদ্ধি পায় এবং তীব্র পরিবেশে বেঁচে থাকতে সক্ষম।
    • পুরুষ বাচ্চার পালক তুলনামূলক কম এবং তারা একটু বেশি উঁচু হয়
    • মেয়ে বাচ্চার পালক দ্রুত ওঠে এবং মাথা মসৃণ থাকে।
ফাউমি মুরগির বাচ্চা চেনার ক্ষেত্রে রং, আচরণ, শরীরের গঠন এবং পালকের ধরন ভালোভাবে লক্ষ্য করলেই সহজে চেনা যায়। তবে অনেক সময় অন্য জাতের সাথে সংকরায়িত হলে এই বৈশিষ্ট্যগুলো কিছুটা ভিন্ন হতে পারে। তাই নিশ্চিত হওয়ার জন্য অভিজ্ঞ কারো পরামর্শ নেওয়া ভালো।

ফাউমি মুরগি পালন পদ্ধতি

ফাউমি মুরগি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে আপনার যদি একজন ভাল খামারি হওয়ার ইচ্ছা থাকে। ফাউমি মুরগি বিদেশি জাতের মুরগি হওয়ায় এই মুরগি সম্পর্কে তেমন কোন ধারনা আমাদের দেশের মানুষ দের মাঝে নেই। আমরা অনেকেই বাসাতে অথবা খামারের জন্য ফাউমি মুরগি পালন করতে ইচ্ছুক থাকি। 

এই মুরগি পালনের সব থেকে বড় সুবিধা হচ্ছে ফাউমি মুরগি অনেক বেশি পরিমাণে ডিম উৎপাদনের ক্ষমতা রাখে। ফাউমি মুরগিকে মিশরীয় মুরগিও বলা হয়ে থাকে কেননা ফাওমি মুরগি মিশরের মুরগির একটি জাত হিসেবে পরিচিতি রয়েছে। বাংলাদেশের ফাউমি মুরগি আসার প্রধান সূত্রই হচ্ছে পাকিস্তান। আমাদের দেশের মানুষ পাকিস্তান থেকে মুরগি নিয়ে এসে পালন করে তাই অনেকে এই মুরগিকে পাকিস্তানি মুরগিও বলে। 

সাধারণভাবে অন্যান্য মুরগির মতোই ফাউমি মুরগিও খুব সহজেই পালন করা যায়। বাংলাদেশের যে আবহাওয়া প্রতিকূলতা সেই অনুযায়ী ফাউমি মুরগি একটি উপযুক্ত জাত হতে পারে পালন করার জন্য। ফাউমি মুরগি গরম সহ্য ক্ষমতা রয়েছে। তাই বাংলাদেশের আবহাওয়া প্রতিকূলতার সাথে খুব সহজেই নিজেকে মানিয়ে নিতে পারি। 

এছাড়াও এই মুরগিগুলোর রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা অনেক বেশি থাকে তাই সহজে কোন রোগে আক্রান্ত হতে দেখা যায় না। লেয়ার মুরগির খাবার তালিকা অনুযায়ী এবং ভ্যাকসিন তালিকা মেনে ফাউমি মুরগি পালন করা যেতে পারে। ফাউমি মুরগি পালন বর্তমান সময়ে এসে বেশ লাভজনক একটি পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেননা ফাউমি মুরগি অনেক বেশি ডিম দেয় অন্যান্য মুরগির থেকে। 

তবে ফাওমি মুরগি পালনের জন্য বেশ খোলামেলা জায়গার প্রয়োজন হয় কেননা এই সকল মুরগি সহজে বন্দি অবস্থায় থাকতে পছন্দ করে না। খামারের মধ্যে রাখলেও সব সময় চেষ্টা করবেন দিনের কিছুটা সময় বাইরে বের করার। বাইরে থাকার ফলে ফাওমি মুরগি নিজে থেকে খাবার সংগ্রহ করবে অর্থাৎ ঘাস অথবা শাক জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে আপনার খাবার খরচটাও অনেক অংশে কমে যেতে পারে। নিচে ফাউমি মুরগির পালন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
  • খামার তৈরির স্থান নির্বাচনঃ ঘর তৈরির জন্য উঁচু ও শুকনো জায়গায় বেছে নিতে হবে। যাতে বৃষ্টির পানি জমে না থাকে এবং বাতাস চলাচল সুবিধা যুক্ত খোলা জায়গায় হওয়া উচিত। সূর্যের আলো যেন ঘরে প্রবেশ করতে পারে সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার পুরো ঘর ভালোভাবে পরিষ্কার করা উচিত।
  • ঘর নির্মাণ পদ্ধতিঃ খড়কুটো টিন অথবা প্লাস্টিক দিয়ে ঘর তৈরি করা যায়। ঘরের মেঝে শুকনো ও পরিষ্কার রাখতে হবে। প্রত্যেকটা মুরগির জন্য কমপক্ষে ২ থেকে ৩ বর্গফুট জায়গায় রাখা উচিত। পর্যাপ্ত বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন।
  • ঘরের তাপমাত্রা ও আলোঃ চিক বাচ্চা (০-৩ সপ্তাহ)ঃ তাপমাত্রা ৩০ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রাখতে হবে। দিনে ও রাতে পর্যাপ্ত কৃত্রিম আলো দিতে হবে। বড় মুরগির জন্য অতিরিক্ত তাপের দরকার হয় না তবে শীতে সতর্ক থাকতে হবে।
  • স্বাস্থ্য পরিচর্যাঃ মুরগিকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং অসুস্থ মুরগিকে আলাদা করে চিকিৎসা দিতে হবে। খাচা ও আশেপাশে নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করতে হবে। এদের ডিম পাড়ার জন্য নরম জায়গা বা নেস্টিং রাখতে হবে।
  • বিক্রয় ও মুনাফাঃ ডিম মাংস ও বাচ্চা সবই বিক্রি করা যায়। স্থানীয় বাজার অনলাইন বা খামারের মাধ্যমে সরবরাহ করা যেতে পারে।
ফাউমি মুরগি পালন লাভজনক একটি উদ্যোগ যা কম খরচে কম জায়গায় এবং সর্ব যত্নের চালানো যায়। নিয়মিত খাদ্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং সময়মতো টিকা দিলে এ জাতের মুরগি ভালো উৎপাদন দেয়।

ফাউমি মুরগি দাম কত 2025

ফাউমি মুরগি দাম কত জানেন কি? এতক্ষণ আমরা ফাউমি মুরগি কত দিনে ডিম দেয়, ফাউমি মুরগির খাবার তালিকা, ফাউমি মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা এছাড়াও ফাউমি মুরগি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি। চলুন এখন ফাউমি মুরগি দাম কত সে সম্পর্কে জানা যাক-

প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বর্তমান সময়ে এসে। এর ফলে মুরগির খাবারের দামও বৃদ্ধি পাওয়াই সব ধরনের মুরগির দাম আগের থেকে বেড়েছে দ্বিগুণ। এজন্য ফাউমি মুরগির বাজার দর অনেক অংশে বৃদ্ধি পেয়েছে আগের থেকে। ফাউমি মুরগি বিদেশি জাতের মুরগি হওয়ায় এর দাম কিছুটা বেশি হয়ে থাকে। 

বর্তমান বাজারদরের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় ফাউমি মুরগি ৩৫০-৪৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হচ্ছে। বয়সের উপর নির্ভর করে ফাওমি মুরগির বাচ্চার দাম কিছুটা পরিবর্তন হয়। তবে জায়গা এবং অঞ্চল ভেদে এর দাম কিছুটা কম বেশি হতে পারে। তাই আপনি যদি ফাউমি মুরগি ক্রয় করতে ইচ্ছুক হন তাহলে যাচাই-বাছাই করে অতঃপর ক্রয় করতে পারেন।
মূল্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে যেসব বিষয় -
    • অঞ্চল ভেদে পার্থক্যঃ শহর ও গ্রামীণ এলাকার মধ্যে দামের পার্থক্য থাকতে পারে।
    • খামারের মান ও পরিচর্যাঃ উন্নত খামার থেকে আশা মুরগির দাম তুলনামূলকভাবে বেশি হতে পারে।
    • চাহিদা ও সরবরাহঃ উৎসবকালীন সময়ে বা বিশেষ চাহিদার সময় দামে পরিবর্তন হতে পারে।
    • খাদ্য ও চিকিৎসা খরচঃম খাদ্যের দাম ও চিকিৎসা ব্যয় এর পরিবর্তন মুরগির মূল্যের প্রভাব ফেলতে পারে।
পরামর্শঃ
স্থানীয় খামার বা বাজার থেকে তথ্য সংগ্রহ করুন। আপনার নিকটস্থ খামার বা পোল্ট্রি বাজার থেকে সরাসরি দাম জেনে নেয়া উত্তম। বিশ্বস্ত উৎস থেকে কিনুন। রোগ মুক্ত ও সুস্থ মুরগি কিনতে বিশ্বস্ত ও পরিচিত খামার থেকে ক্রয় করুন।

সবচেয়ে বেশি ডিম দেয় কোন মুরগি

কোন মুরগির ডিমে পুষ্টি বেশি আমাদের অনেকের অজানা। ফাউমি মুরগি কত দিনে ডিম দেয় আপনি যদি ফাউমি মুরগি ডিম এড়িয়ে চলেন তাহলে ফাউমি মুরগির ডিমের বিকল্প হিসেবে কোন মুরগির ডিমের পুষ্টি বেশি সে সম্পর্কে আপনার অবগত থাকতে হবে। ডিম মূলত আমরা কমবেশি সবাই খেয়ে থাকি তাই আমাদের জানা উচিত কোন মুরগির ডিমে পুষ্টি বেশি থাকে।

ডিম আমাদের জীবনের অন্যতম পুষ্টি সমৃদ্ধ একটি খাবার। যাতে রয়েছে প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজের মতো চমৎকার উৎস। তবে বাজারে বিভিন্ন ধরনের মুরগির ডিম কিনতে পাওয়া যায় যেমনঃ দেশি মুরগির ডিম, ব্রয়লার মুরগী ডিম, ফার্মের ডিম এবং অর্গানিক মুরগির ডিম। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কোন মুরগির ডিমের পুষ্টিগুণ বেশি থাকে বা সবচেয়ে বেশি পুষ্টি পাওয়া যায়? চলুন বিশ্লেষণ করে দেখা যাক কোন ডিম আপনার স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে উপকারী হতে পারে-

  • দেশি মুরগির ডিমঃ দেশি মুরগিগুলো সাধারণত খোলা পরিবেশের মধ্যে বেড়ে ওঠে এবং প্রাকৃতিক যেসব খাদ্য যেমনঃ পোকামাকড়, ঘাস, ছোট গাছের পাতা ইত্যাদি খেয়ে বেঁচে থাকে। এর ফলে তাদের ডিমের পুষ্টিগুণ তুলনামূলকভাবে বেশি হয়ে থাকে এবং প্রাকৃতিক খাদ্যাভাস কারণে এসব ডিম থেকে বেশি পরিমাণ ভিটামিন ও মিনারেল পাওয়া যায়।
  • ব্রয়লার মুরগির ডিমঃ ব্রয়লার মুরগির ডিম গুলো সাধারণত ফার্মে উৎপাদিত হয়ে থাকে। যেখানে মুরগিগুলোকে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশের মধ্যে রাখা হয় এবং তারা ফিড বা খাদ্য খেয়ে বেঁচে থাকে। যা পুষ্টি সমৃদ্ধ হলেও প্রাকৃতিক খাদ্যের মতো বৈচিত্র্যপূর্ণ হয় না।
  • পেস্টচারাইজড মুরগির ডিমঃ মুরগিরা খোলা মাঠের মধ্যে ঘাস গাছের পাতা প্রাকৃতিক খাবার পোকামাকড় খেয়ে বেড়ে ওঠে। তারা সাধারণত প্রাকৃতিক পরিবেশে লালন-পালন হয় এবং খুব কমই কৃত্রিম খাদ্য পাই।
  • অর্গানিক মুরগির ডিমঃ অর্গানিক ডিম উৎপাদিত হয় সেইসব মুরগি থেকে যাদেরকে কোন ধরনের কৃত্রিম হরমোন, এন্টিবায়োটিক বা খাদ্য খাওয়ানো হয় না। এই মুরগিরা প্রাকৃতিক খাদ্য খায় এবং খোলা জায়গায় ঘুরে বেড়াই।
  • ফার্মের ডিমঃ ফার্মের মুরগিগুলো নিয়ন্ত্রিত খাদ্য এবং পরিবেশের মধ্যে বেড়ে ওঠে এবং তাদের খাদ্যাভাসে বিশেষ উপাদান যোগ করা হয়ে থাকে। যাতে ডিমে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড এবং অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান বৃদ্ধি পায়।

কোন মুরগির ডিম সবচেয়ে পুষ্টিকর?

সাধারণভাবে সব ধরনের ডিমই পুষ্টির উৎস। তবে দেশি মুরগির ডিম গুলোকে সবচেয়ে পুষ্টিকর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কেননা এর প্রাকৃতিক খাদ্যাভাস এবং খোলা পরিবেশে বেড়ে ওঠে। এ কারণে ডিমে ভিটামিন ওমেগা-৩ এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট এর পরিমাণ সবচেয়ে বেশি থাকে। এছাড়াও অর্গানিক এবং পেস্টচারাইজড যে মুরগির ডিম গুলো রয়েছে এগুলো খুবই পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর হয়ে থাকে।

তবে আপনারা যে ধরনের ডিম খান না কেন ডিমের পুষ্টিগুণ আপনার খাদ্যাভাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়াতে পারে। যা শারীরিক সামগ্রিক সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাহলে আশা করছি ফাউমি মুরগি কত দিনে ডিম দেয় এবং কোন মুরগির ডিমে পুষ্টি বেশি সে সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন।

ফাউমি মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা

ফাউমি মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা। ফাউমি মুরগি পালন করে লাভজনক হতে চাইলে অবশ্যই ফাউমি মুরগির ভ্যাকসিন তালিকার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। সোনালি মুরগির প্যারেন্ট স্টক হিসেবে ফাউমি মুরগি পালন করা হয়ে থাকে। আপনার যদি ফাউমি মুরগির খামার থাকে তাহলে আপনাকে বেশ কিছু রোগের প্রতিরোধক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজনীয়। 
ফাউমি মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ভ্যাকসিন একটি অত্যন্ত কার্যকরী পন্থা। কেননা আপনি যদি আপনার খামারের মুরগিকে সুস্থ রাখতে চান তাহলে সঠিকভাবে ভ্যাকসিন সিডিউল মেনে চলতে হবে। ফাউমি মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা নির্দিষ্ট বয়স অনুযায়ী প্রদান করা হয় যা মুরগিকে বিভিন্ন সংক্রামক রোগ থেকে সুরক্ষা দেয়। ফাউমি মুরগির খাবার তালিকা সম্পর্কে জেনেছেন নিচে ফাউমি মুরগির জন্য একটি প্রস্তাবিত ভ্যাকসিন সিডিউল দেয়া হলো-
একদিন বয়সেঃ 
  • ভ্যাকসিনের নাম মারেক্স।
  • প্রয়োগ পদ্ধতিঃ সাব কিউটেনিয়াস ইনজেকশন( ঘাড়ের নিচে)।
পাঁচ থেকে সাত দিন বয়সেঃ
  • ভ্যাকসিনের নাম নিউ ক্যাসল
  • প্রয়োগ পদ্ধতিঃ চোখে ফোটা বা পানির মাধ্যমে।
১০ থেকে ১২ দিন বয়সেঃ 
  • ভ্যাকসিনের নাম গামবোরো।
  • প্রয়োগ পদ্ধতিঃ পানির মাধ্যমে।
১৬ থেকে ১৮ দিন বয়সেঃ 
  • ভ্যাকসিনের নাম গামবোরো দ্বিতীয় ডোজ
  • প্রয়োগ পদ্ধতিঃ পানির মাধ্যমে।
৩০ থেকে ৪৫ দিন বয়সেঃ
  • ভ্যাকসিনের নামইনফেকশিয়াস ব্রংকাইটিস
  • প্রয়োগ পদ্ধতিঃ চোখে ফোটা বা পানির মাধ্যমে।
৪৫ দিন বয়সেঃ 
  • ভ্যাকসিনের নাম ফাউল পক্স
  • প্রয়োগ পদ্ধতিঃ পাখার পাতাই ইনজেকশন।
৬০ দিন বয়সেঃ 
  • ভ্যাকসিনের নাম ফাউল কলেরা।
  • প্রয়োগ পদ্ধতিঃ সাব কিউটেনিয়াস ইনজেকশন
৭৫ দিন বয়সেঃ
  • ভ্যাকসিনের নাম টাইফয়েড।
  • প্রয়োগ পদ্ধতিঃ সাব কিউটেনিয়াস ইঞ্জেকশন।
৯০ দিন বয়সেঃ 
  • ভ্যাকসিনের নাম নিউ ক্যাসল বুস্টার
  • প্রয়োগ পদ্ধতিঃ পানির মাধ্যমে।
গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা-
    • ভ্যাকসিন সংরক্ষণঃ ভ্যাকসিন সবসময়ই ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করুন।
    • প্রয়োগের সময়ঃ ভ্যাকসিন প্রয়োগের আগে মুরগিকে ১-২ ঘন্টা না খাইয়ে রাখুন যাতে তারা ভ্যাকসিনযুক্ত পানি সহজে গ্রহণ করে।
    • পরিচ্ছন্নতাঃ ভ্যাকসিন প্রয়োগের সময় হাত ও সরঞ্জাম পরিষ্কার রাখুন।
    • পরামর্শঃ ভ্যাকসিন প্রয়োগের আগে স্থানীয় প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার পরামর্শ নিন।

ফাউমি মুরগি কত দিনে ডিম দেয় সে সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন উত্তর

প্রশ্নঃ মুরগির ডিম ফুটতে কতদিন সময় লাগে?
উত্তরঃ মুরগির ডিম ফুটে বাচ্চা বের হতে সাধারণত ২১ দিন সময় লাগে। তবে এটি পরিবেশ ও তাপমাত্রার উপর কিছুটা নির্ভর করে। যথাযথ তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা বজায় থাকলে ২১ দিনেই ডিম ফুটে।

প্রশ্নঃ ফাউমি মুরগির ডিমের দাম কত?
উত্তরঃ বাংলাদেশে ফাউমি মুরগির ডিমের দাম সাধারণত প্রতি পিস ২০ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে এই দাম স্থান, মৌসুম ও বাজার পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। যদি আপনি হ্যাচিং বা বিজ ডিম ফুটানোর জন্য কিনতে চান তবে সেগুলোর দাম সাধারণত বেশি হয় প্রতি পিস প্রায় ৮০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

প্রশ্নঃ ইনকিউবেটর মেশিনের দাম কত?
উত্তরঃ বাংলাদেশে ইনকিউবেটর মেশিনের দাম মডেল ডিম ধারন ক্ষমতা এবং ফিচারের উপর ভিত্তি করে ভিন্ন হয়।
    • ৫০ থেকে ১০০ ডিমের ইনকিউবেটরঃ তিন হাজার থেকে সাত হাজার টাকা।
    • ২০০ থেকে ৫০০ ডিমের ইনকিউবেটরঃ ৮০০০ থেকে ২০ হাজার টাকা।
    • ১০০০০ ডিম বা তার বেশি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্নঃ ২৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে কয়েক লক্ষ টাকা হতে পারে।
    • দেশি ও চায়নিজ ব্র্যান্ডের মধ্যে দামেও পার্থক্য থাকে।

প্রশ্নঃ মুরগি কত মাসে ডিম দেয়া শুরু করে?
উত্তরঃ মুরগি সাধারণত ৫ থেকে ৬ মাস বয়সে ডিম দেওয়া শুরু করে তবে এটি জাত ও পরিচর্যার উপর নির্ভর করে।

প্রশ্নঃ মুরগিকে কতদিন পর পর টিকা দিতে হয়?
উত্তরঃ মুরগিকে বয়স ভিত্তিক বিভিন্ন সময় টিকা দিতে হয়।
    • একদিন বয়সেঃ মারেক্স
    • ৭ দিনঃ নিউক্যাসল (ফো)
    • ১৪ দিনঃ গামবোরো
    • ২১ দিনঃ নিউ ক্যাসল (আই/বি)
    • ৩০ দিনঃ গাম বড় (দ্বিতীয় ডোজ)
    • 45 দিনঃ নিউ ক্যাসল + আইবি (বুস্টার)
এরপর প্রতি দুই থেকে তিন মাস পর নিউক্যাসেলের বুস্টার দেওয়া হয়। সময়মতো টিকা দিলে রোগ প্রতিরোধ শক্তি ভালো থাকে

ফাউমি মুরগি কত দিনে ডিম দেয় সে সম্পর্কে লেখক এর অভিমত

আজকের আর্টিকেলে ফাউমি জাতের মুরগির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস, ফাউমি মুরগি কত দিনে ডিম দেয়, ফাউমি মুরগির খাবার তালিকা, ফাউমি মুরগির বাচ্চা চেনার উপায়, ফাউমি মুরগি পালন পদ্ধতি, ফাউমি মুরগি দাম কত 2025, সবচেয়ে বেশি ডিম দেয় কোন মুরগি, ফাউমি মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা সে সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেবার চেষ্টা করেছি। 

খামারীদের জন্য ফাউমি মুরগি অত্যন্ত লাভজনক কেননা এই মুরগি খেতে যেরকম সুস্বাদু সেরকম সারা বছর ডিম উৎপাদনের ক্ষমতা রাখে। মুরগির দ্রুত বৃদ্ধির জন্য এবং সুস্থতা এবং ডিম উৎপাদন নিশ্চিত করতে সঠিক খাবারের কোনই বিকল্প নেই। পুষ্টিকর এবং সুষম খাদ্য তালিকা মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে এবং উৎপাদনশীলতাকে উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে। তাই খাবার নির্বাচন এবং গুণগতমানের দিকেও নজর রাখার জরুরি

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাল্টিম্যাক্স আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।

comment url