গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার ২০টি ঘরোয়া উপায় (১০০% কার্যকরী)

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানতে চান? ঘরোয়া উপায় ব্যবহার করে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাকে জানান চির বিদায়। সেই সাথে আজকের আর্টিকেলে গ্যাস্ট্রিক দূর করার ব্যায়াম সম্পর্কে আলোচনা করব।
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার ২০টি কার্যকরী ঘরোয়া উপায়
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। গ্যাস্ট্রিকে ভোগা মানুষের সংখ্যা নিতান্তই কম নয়। তাই চলুন দেখে নেয়া যাক গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার ঘরোয়া উপায়। এবং আরো জানাবো গ্যাস্ট্রিক দূর করার ব্যায়াম সম্পর্কে।

পোষ্টের সূচিপত্রঃ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার ঘরোয়া উপায়

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার ২০টি কার্যকরী ঘরোয়া উপায়

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার ঘরোয়া উপায় কি? খেতে কেনা পছন্দ করে। আর বাঙালি মানেই ভোজন রসিক। গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটি বা গ্যাসের সমস্যা হলে আমরা অল্পতেই ঔষধ খেয়ে থাকি। ওষুধ ছাড়াই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করা যাবে ঘরোয়া কিছু উপায়ে। 
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার ২০টি কার্যকরী ঘরোয়া উপায়
তাহলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে নিস্তার পেতে চলুন জেনে নেয়া যাক ২০টি কার্যকরী ঘরোয়া উপায়।
  • চিরতরে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে মেথির ব্যবহারঃ ঔষধ ছাড়াই মেথির ব্যবহারে মিলবে চিরতরে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য মেথি চিবিয়ে খেতে পারেন। এছাড়াও এক গ্লাস পানি নিন এবং তার মধ্যে এক চা চামচ মেথি গুড়া মিশিয়ে নিন। এই মেথি গুড়া মিশ্রিত পানি পান করলে এসিডিটির জন্য যে জ্বালাপোড়া অনুভূত হয় তা অনেকাংশে কমে যাবে। তাছাড়া আপনি রাত্রে এক গ্লাস পানির মধ্যে এক চা চামচ মেথি ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে পান করতে পারেন।দ এতে অনেকটা উপকার পাবেন।
  • গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য ঠান্ডা দুধ এর ব্যবহারঃ এসিডিটির সময় যে জ্বালাপোড়া অনুভুত হয় তা দুর করতে এক গ্লাস ঠান্ডা দুধ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। দুধের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। যা এসিড উৎপাদনের ক্ষমতাকে বাধা প্রদান করে এসিডকে নিরপেক্ষ করে।
  • গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অ্যালোভেরার ব্যবহারঃ অ্যালোভেরাতে রয়েছে নানাবিধ পুষ্টি উপাদান। রূপচর্চায় অ্যালোভেরার ব্যবহারের পাশাপাশি অ্যালোভেরা আমাদের শরীরের হজম ক্ষমতাকে উন্নত করে। অ্যালোভেরা এসিডের কার্যকারিতাকে কমিয়ে দিয়ে আমাদের পেটে তৈরি হওয়া গ্যাস দূর করতে সাহায্য করে। তাই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত অ্যালোভেরা খেতে পারেন।
  • গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে রসুনের ব্যবহারঃ আমাদের সবার ঘরেই রসুন রয়েছে। আমরা রান্নার কাছে রসুন ব্যবহার করে থাকি।  সমস্যা দূর করতে রসুনের বিকল্প নেই। প্রতিদিন এক কোয়া করে রসুন খেলে তা দারুণভাবে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। তাই অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হলে হাতের কাছে থাকা রসুন খেতে ভুলবেন না যেন।
  • গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য লেবু পানি কিংবা লেবু চা এর ব্যবহারঃ তাৎক্ষণিক গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে লেবু পানি কিংবা লেবু চা ম্যাজিকের মত কাজ করে। আপনি চাইলে লেবু পানির সাথে সামান্য পরিমাণ কালো লবণ, ভাজা জিরা গুঁড়ো এবং এক গ্লাস লেবু পানির মধ্যে সামান্য পরিমাণ বেকিং সোডা মিশিয়ে নিতে পারেন এতে স্বাদ ও উপকারিতা বাড়াতে সাহায্য করবে। এই লেবু পানি কিংবা লেবু চা এসিডিটি কমিয়ে আপনার হজমে সাহায্য করবে।
  • তুলসী পাতাঃ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার ঘরোয়া উপায় এর মধ্যে অন্যতম হলো তুলসী পাতা। ঔষধ ছাড়াই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে তুলসী পাতা খুবই কার্যকরী একটি উপাদান। ওষুধ ছাড়াই গ্যাস্ট্রিক দূর করতে নিয়মিত তুলসী পাতা খেতে হবে এতে অনেকটা স্বস্তি মিলবে।
  • গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ভেষজ চাঃ যদি আপনি গ্যাস্ট্রিকের অস্বস্তি থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে এক কাপ গরম চা দারুন ভাবে সাহায্য করবে। আর এই চা তৈরিতে আপনি আপনার রান্না ঘরে থাকা ভেষজ উপাদান ব্যবহার করে সহজে তৈরি করে নিতে পারেন এক কাপ গরম চা। আপনাদের অনেকের ঘরেই আদা, মৌরি ইত্যাদি উপাদান রয়েছে। যা ব্যবহার করে এক কাপ ভেষজ চা সহজেই বানিয়ে নিতে পারেন। এই চা পান করার মাধ্যমে সাথে সাথে আপনার বুকজ্বালা, গ্যাস, ফোলাভাব এবং ক্ষুধা হ্রাস করে আপনাকে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে।
  • গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য লবঙ্গ-র ব্যবহারঃ আমরা রান্নার কাজে লবঙ্গর ব্যবহার করে থাকি তাই আমাদের সবার ঘরেই লবঙ্গ রয়েছে। আপনি যদি প্রতিদিন কমপক্ষে দুই থেকে তিনটি লবঙ্গ মুখে দিয়ে চুষেন তাহলে তা আপনার বুক জ্বালা, বমি ভাব, গ্যাসের সমস্যা দূর করবে এবং সেইসাথে মুখের দুর্গন্ধ দূর করতেও সাহায্য করবে।
  • গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে জিরার ব্যবহারঃ গ্যাস্ট্রিক সারাতে খুবই কার্যকরী একটি উপাদান হল জিরা। আমরা রান্নার কাজে জিরা ব্যবহার করে থাকি তাই কমবেশি আমাদের সবার ঘরেই জিরা রয়েছে। তাই ঘরোয়া উপায়ে গ্যাস্ট্রিক দূর করার জন্য জিরা ব্যবহার করতে ভুলবেন না যেন।
  • আলুর রসঃ আলুর রস গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে দারুন ভাবে সাহায্য করে। এইজন্য একটি বা দুটো আলু নিন এবং এটিকে ভালোভাবে ধুয়ে নিয়ে গ্রেট করুন। এখন এক গ্লাস গরম পানি সঙ্গে এই আলুর রস মিশিয়ে নিন এবং দিনে দুই থেকে তিনবার পান করুন। খাবার খাওয়ার অন্তত 30 মিনিট আগে এই আলুর রস মিশ্রিত গরম পানি খেতে হবে। এভাবে দুই সপ্তাহে এই পানিও পান করলে গ্যাস্ট্রোকের সমস্যায় অনেকটা স্বস্তি মিলবে।
  • গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পুদিনা জুস এর ব্যবহারঃ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য অন্যতম একটি উপাদান হলো পুদিনার জুস। এছাড়া আপনি পুদিনার চা কিংবা পুদিনার চাটনিও খেতে পারেন। এছাড়াও আপনার পেটের ব্যথা কমাতে পুদিনার রস কিংবা পুদিনা চা অথবা পুদিনা চাটনি দারুণভাবে সাহায্য করবে।
  • গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য শসার ব্যবহারঃ আমরা কম-বেশী অনেকেই শসা খেতে পছন্দ করি। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য শসা হতে পারে একটি অন্যতম উপাদান। কেননা শসা আমাদের পেটকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
  • গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পেঁপের ব্যবহারঃ পেঁপে আমাদের হজম শক্তি বাড়াতে অনেক বেশি কার্যকরী। আপনার যদি অনেক বেশি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে থাকে তবে নিয়মিত পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস করুন এবং চিরতরে গ্যাস্ট্রিককে বাই বাই বলুন।
  • গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য দই এর ব্যবহারঃ দই এমন একটি উপাদান যা আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবংগ্যাসের প্রবণতাকে কমাতে অনেক বেশি সহায়তা করে।
  • গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চিয়া বীজ এর ব্যবহারঃ চিয়া বীজ এমন একটি উপাদান যার রয়েছে প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য। প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি, ফাইবার, ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ একটি খাবার হলো চিয়া বীজ। ঠান্ডা কোনো পানীয়, ফলের রস, দই ইত্যাদির সঙ্গে চিয়া বীজ মিশিয়ে খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় মিলবে স্বস্তি।
  • গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য ইস্পাগুলার ব্যবহারঃ ইস্পাগুলাকে আমরা অনেকেই ইসবগুল নামে জানি। ইস্পাগুলা একসাথে অনেকগুলো কাজ করে থাকে। আপনি যদি গরম দুধের সাথে ইসবগুল মিশিয়ে খান তাহলে এটা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। এই ইস্পাগুলা আপনি যদি ঠান্ডা দুধের সাথে মিশিয়ে খান তবে তা আপনার এসিডিটি নিরূপণের সাহায্য করে। আর আপনি যদি ইসপাগুলা বা ইসবগুল দই এর সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন তাহলে এটা আপনার পেট খারাপ দূর করতে সাহায্য করবে। বদহজম কমাবে এবং আলগা মল উপশমে সহায়তা করবে।
  • ডাবের পানিঃ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে ডাবের পানি ম্যাজিক এর মত কাজ করে। যদি সম্ভব হয় নিয়মিত ডাবের পানি পান করুন। নিয়মিত ডাবের পানি পান করলে তা আমাদের শরীরের হজম ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে এবং সহজেই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করবে।
  • গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে দারুচিনির ব্যবহারঃ চুলায় একটি পাত্রে এক গ্লাস পানি নিন। এবং দারুচিনির গুঁড়ো আধা চামচ যোগ করুন। এবার এই দারুচিনি মিশ্রিত পানি ভালোভাবে ফুটিয়ে নিন। দিনে দুই থেকে তিন বার এই দারুচিনি মিশ্রিত পানি পান করলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে খুবই ভালো কাজ করবে।
  • গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে কলার ব্যবহারঃ প্রতিদিন একটি করে কলা খেলে মিলবে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা নিস্তার। কলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম এবং অ্যান্টাসিড। যা গ্যাস্ট্রিকের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে। তাই সম্ভব হলে প্রতিদিন একটি করে কলা খান
  • প্রচুর পরিমাণে পানি পান করাঃ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করার বিকল্প নেই। প্রতিদিন সকালে কমপক্ষে দুই গ্লাস পানি পান করুন। পানি পান করার মাধ্যমে আমাদের শরীরের ময়লা আবর্জনা মোলের সঙ্গে বের হয়ে যায় এবং কোলন পরিষ্কার থাকে। কমপক্ষে প্রতিদিন ৩ লিটার পরিমাণ পানি পান করা উচিত। তবে যাদের কিডনি বা হার্টের অসুখ রয়েছে তাদের প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা থেকে বিরত থাকবেন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পানি পান করুন। পাশাপাশি ওরস্যালাইন খেতে পারেন।

গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণসমূহ গুলো কি কি

গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণ গুলো কি কি আমরা অনেকেই জানিনা। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার ঘরোয়া উপায় যেহেতু আমরা এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করছি তাই আমাদের গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণ সমূহ গুলো যেন অত্যন্ত জরুরি। আমরা অনেকেই শুধুমাত্র বুক জ্বালাপোড়াকে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ভেবে থাকি। বুক জ্বালাপোড়া করা ছাড়াও আরো অনেক লক্ষণ রয়েছে যেগুলো হলে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়েছে বলে মনে করবেন। এবং সে অনুযায়ী ঘরোয়া চিকিৎসা সেবন করবেন। এতক্ষণ আমরা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার ২০টি কার্যকরী ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জেনেছি। চলুন তাহলে জেনে নিয়া যাক গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণ গুলো কি কি।
  • বুক জ্বালাপোড়া
  • পেটে জ্বালাপোড়া
  • বদহজম
  • পেটে ক্ষুধা
  • বমি বমি ভাব
  • হেঁচকি ওঠা
  • বমি করা
  • ক্ষুধা হ্রাস পাওয়া
  • ঢেকুর ওঠা
  • খাবার পর উপরের পেট অনেক বেশি ভরে গিয়েছে অনুভূত হওয়া

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার কারণসমূহ

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার কারণসমূহ আমাদের অনেকের অজানা। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার ঘরোয়া উপায় জানার আগে আপনার জানতে হবে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার কারণসমূহ। প্রায়ই আমরা অস্বাস্থ্যকর ভাবে জীবন যাপন করি। এই অস্বাস্থ্যকর ভাবে জীবনযাত্রার কারণে আমাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়ে থাকে। তাই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করে উপকার মিলবে। 

আমরা এতক্ষণ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য ২০ টি কার্যকরী ঘরোয়া উপায় এবং গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণ গুলো জেনেছি। তাহলে চলুন এখন জেনে নেয়া যাক কেন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয় বা গ্যাস্ট্রিকের কারণসমূহ।

  • খাবার সময় মত না খাওয়া গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার অন্যতম একটি কারণ।
  • খাদ্য তালিকায় ফাইবারের মাত্রা কম থাকায় গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয়।
  • অতিরিক্ত বাইরের ভাজাপোড়া খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়।
  • অনেক বেশি জাঙ্কফুড খাওয়ার কারণে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • পরিমাণ মতো পানি পান না করলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিবে।
  • খাবার পরপরই শুয়ে পড়ার কারণে গ্যাস্ট্রিক হতে পারে।
  • অতিরিক্ত ডায়রিয়ার ওষুধ খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে।
  • অতিরিক্ত তেল মসলা জনিত খাবার খাওয়ার কারণে গ্যাস্ট্রিক দেখা দিতে পারে।
  • নিয়মিত টয়লেট না হওয়ার কারণে ও গ্যাস্ট্রিক হতে পারে।
  • বেশি পরিমাণে দুগ্ধজাত দ্রব্য পান করার মাধ্যমে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে।
  • শারীরিক কার্যকলাপের অভাব দেখা দিলে গ্যাস্ট্রিকের  সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • গর্ভাবস্থায় গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • ধূমপান করার কারণে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে।
  • অ্যালকোহল পান করার মাধ্যমে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের অভাবে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • অনেক সময় মানসিক চাপের কারণেও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়।

গ্যাস্ট্রিক দূর করার ব্যায়াম

গ্যাস্ট্রিক দূর করার জন্য ব্যায়াম অত্যন্ত কার্যকরী। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার ঘরোয়া উপায় এর পাশাপাশি গ্যাস্ট্রিক দূর করার ব্যায়াম সম্পর্কে অবগত থাকলে আপনি দ্রুত উপশম পাবেন। গ্যাস্ট্রিক বা পেট ফাঁপার সমস্যায় ভোগেন না এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। আর এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আমরা প্রতিনিয়ত গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ সেবন করে যাচ্ছি। 

তবে চাইলেই আপনি এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারবেন কিছু যোগাসন বা ব্যায়াম করার মাধ্যমে। গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য শরীর চর্চা যোগাসন বা ব্যায়াম করা অত্যন্ত জরুরি। 
গ্যাস্ট্রিক দূর করার ব্যায়াম
আমাদের নিত্যদিনের হজমে সঙ্গী হয়ে উঠেছে যেন গ্যাস্ট্রিক। এই গ্যাস্ট্রিক বা গ্যাসের সমস্যা যদি না কমে তাহলে হৃদরোগের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমাতে ব্যায়াম এর বিকল্প নেই। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক গুরুত্বপূর্ণ সেই ব্যায়ামগুলো সম্পর্কে যেগুলো আপনি ঘরে বসে নিয়মিত করলেই দ্রুত গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে নিস্তার পেতে পারেন।

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে কিছু কার্যকর ব্যায়াম
  • হাটাঃ আমাদের শরীরকে সুস্থ ও ভালো রাখতে হাটার বিকল্প নেই। সহজ ও কার্যকর শরীরচর্চার মধ্যে হাটা খুবই কার্যকরী একটি ব্যায়াম। প্রতিদিন নিয়ম করে যদি ৩০ মিনিট হাঁটতে পারেন তাহলে তা আপনার পেটে গ্যাস এর সমস্যা দূর করতে ম্যাজিকের মত কাজ করবে।
  • গ্যাসের সমস্যা দূর করতে বজ্রাসনঃ বজ্রাসন ব্যায়ামটি করার জন্য প্রথমে আপনাকে সামনের দিকে পা ছাড়িয়ে সোজা হয়ে বসতে হবে। এরপর গোড়ালি জোড়া করে একটি করে পা হাটু মোড়ে তার উপরে বসতে হবে। এরপর আপনার হাত দুটোকে আপনার উরুর উপর সোজা করে রাখুন।৩ থেকে ৫ মিনিট এই ভঙ্গিতে বসে থাকুন। এই আসনটি করার মাধ্যমে পেটের রক্ত সঞ্চালনকে স্বাভাবিক রাখবে এবং আপনার পেটের অতিরিক্ত মেদ কমিয়ে ফেলতে সাহায্য করবে। একই সঙ্গে গ্যাস্ট্রিক দূর করতে সহায়তা করবে।
  • গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে বালাসনঃ গ্যাস্ট্রিক দূর করার জন্য সবচেয়ে আরামদায়ক একটি ব্যায়াম হলো বালাসন। এ আসনটি করার জন্য বজ্রাসনে যেভাবে বসতে হয় সেভাবে বসুন। এখন আপনার হাত দুটোকে একসাথে জোড়া করে নিন এবং সামনের দিকে ঝুকে বসুন। এখন আপনি ধীরে ধীরে শ্বাস নিতে থাকুন এবং ছাড়তে থাকুন। নিয়মিত এ ব্যায়াম করলে গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
  • গ্যাসের সমস্যায় পশ্চিমোত্তানাসনঃ এই আসনটি করার জন্য প্রথমে আপনি চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন এবং আপনার হাত দুটো মাথার দুই পাশে উপরের দিকে রেখে পা দুটোও জোড়া করে রাখুন। এবার ধীরে ধীরে উঠে বসুন এবং দুই হাত দিয়ে আপনার দুই পায়ের বুড়ো আঙ্গুল স্পর্শ করার চেষ্টা করুন। কপাল দুই পায়ে ঠেকিয়ে রাখুন এবং আপনার পেট ও বুক উরুতে ঠেকানোর চেষ্টা করুন তবে হাঁটু ভাজ না করে।
  • বিপরীতকরণী মুদ্রাঃ এই আসনটি করার জন্য চিৎ হয়ে শুয়ে পা দুটো জোড়া করে আস্তে আস্তে উপরের দিকে তোলার চেষ্টা করুন। এখন দুই হাত মাটির সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে রাখুন। কোমর থেকে পা পর্যন্ত সোজা করে রাখুন। এ অবস্থাতে আপনার শ্বাস-প্রশ্বাসকে স্বাভাবিক রাখুন এবং ১০-৩০ পর্যন্ত গুনতে থাকুন। এবার আস্তে আস্তে পা নামান এবং কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন। এভাবে নিয়মিত কিছু সময় ধরে এই আসনটি করলে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হবে বলে আশা করছি। এছাড়া এই আসনটি করার মাধ্যমে আপনার মাথা ঘোরার সমস্যা, লো ব্লাড প্রেসার, টেনশন, নার্ভাস, কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা চিরতরে দূর করার জন্য অজানা কিছু তথ্য

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার ঘরোয়া উপায় এর পাশাপাশি আমাদের আরও কিছু বিষয় জানা জরুরী। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আমাদের কোলোনকে সুস্থ রাখতে হবে। কোলন হল আমাদের শরীরের মধ্যে থাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শরীরের মধ্যে থাকা এই অংশটি খাবার হজমে সাহায্য করে। আমাদের শরীরের পুষ্টির শোষণ করে। মল তৈরি সহ আরো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে কলোনের বিকল্প নেই। আপনার খাদ্যাভাসের ভুল ত্রুটির কারণে আমাদের শরীরের এই অংশে অর্থাৎ কোলনে ময়লা আবর্জনা জমা হয়। 

আর এখান থেকেই মূলত দেখা দেয় গ্যাস এর পাশাপাশি আরো অনেক সমস্যা। তাই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য কোলন পরিষ্কার রাখার বিকল্প নেই। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা, হাই ফাইবার যুক্ত খাবার খাওয়া, রেজিস্টেন্স স্টার্চ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, ফলের রস এবং হারবাল টিয়ের মাধ্যমে আমরা আমাদের কোলনকে পরিষ্কার এবং সুস্থ রাখতে পারি।

ডাল কলা আলু হলো প্রচুর পরিমাণে রেজিস্ট্যান্স স্টার্চ সমৃদ্ধ খাবার। তাই আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রেজিস্টেন্স স্টার্চ সমৃদ্ধ খাবার রাখা উচিত। তবে যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তারা এ সমৃদ্ধ খাবার কম খাবেন। আমরা খাওয়া-দাওয়ার প্রতি অনেক বেশি উদাস। আমরা সঠিক সময়ে খাবার গ্রহণ করি না। আবার কখনো কখনো পেটপুরে   অতিরিক্ত খাবার খেয়ে থাকি । 

আবার অনেকের শরীরের ওজন দিন দিন বেড়েই যেতে থাকে। যেটা স্বাভাবিকভাবে দেখায় একদমই উচিত নয়। অতিরিক্ত শরীরের ওজন বেড়ে গেলে নিত্যদিনই কোন না কোন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং বিভিন্ন রোগ বাসা বাঁধতে থাকে। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে চিরতরে মুক্তি পাওয়া কঠিন কোন কাজ নয়। 

আমাদের খাওয়া দাওয়ার প্রতি খেয়াল রাখতে হবে এবং যত্নশীল হতে হবে। এছাড়া শরীরের ওজন কমানো, সঠিক সময়ে খাবার গ্রহণ করা এবং খাবার গ্রহণের ব্যবধানের দিকে খেয়াল রাখা, খালি পেটে চা পান করা থেকে বিরত থাকা, ওপরে উল্লিখিত খাবারের সাথে নিয়মিত আশ জাতীয় খাবার খাওয়া ইত্যাদি বিষয়গুলো প্রতি একটু নজর রাখলে বা আপনার আয়ত্তের মধ্যে রাখতে পারলেই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা চিরতরে দূর করতে পারেন।

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে লেখক এর মন্তব্য

আজকের আর্টিকেলে আমরা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জেনেছি। এবং সেই সাথে গ্যাস্ট্রিক দূর করার ব্যায়াম এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা চিরতরে দূর করার জন্য অজানা কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়ার চেষ্টা করেছি। এবং সেই সাথে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার লক্ষণ গুলো কি কি এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার কারণসমূহ নিয়ে আলোচনা করেছি।

আমাদের শরীরের যেকোনো সমস্যাতেই সাহায্য নিতে হয় ঔষধের। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার জন্য আলাদা নয়। গ্যাস্ট্রিক যেন হজমের সমস্যার সঙ্গী। ঔষধ সেবনে সমস্যা কমলেও দীর্ঘদিন ধরে ঔষধ সেবনের ফলে শরীরে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। অথচ ঔষধ ছাড়াই ঘরোয়া কিছু উপায় অবলম্বন করে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা থেকে চিরতরে মুক্তি পাওয়া যায়। 

এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য প্রথমত আপনার জীবনধারার পরিবর্তন করা অত্যন্ত জরুরী। জীবনধারা পরিবর্তনের জন্য প্রতিদিন যেমন ব্যায়াম ও শরীর চর্চা করার অভ্যাস প্রয়োজন। তেমনি দরকার সঠিক খাদ্যাভাস বজায় রাখা। কথায় আছে পেট ঠান্ডা তো দুনিয়া ঠান্ডা। তবে আপনার যদি বারবার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয় তবে ঘরোয়া প্রতিকার ছাড়াও আপনাকে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত এবং সে অনুযায়ী ঔষধ সেবন করা প্রয়োজন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাল্টিম্যাক্স আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।

comment url