কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় 2024 (১০০% কার্যকরী)

কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। সেই সাথে আজকের আর্টিকেলে কোন জাতের কবুতর পালন লাভজনক সে সম্পর্কে আলোচনা করব।
কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় 2024 (১০০% কার্যকরী)
আজকের আর্টিকেলে এমন কতগুলা উপায় আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি যা থেকে সহজেই বুঝতে পারবেন কোন জাতের কবুতর বেশী বাচ্চা দেয় এবং কোন জাতের কবুতর পালন করলে বেশি লাভবান হবেন।

পোস্টের সূচিপত্রঃ কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয়/ কোন জাতের কবুতর পালন লাভজনক

কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয়

কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় তা আমাদের অনেকের অজানা। প্রথমে আমাদের দেখতে হবে যে আমরা সঠিক জাতের কবুতর নিয়েছি কিনা। তা না হলে কবুতর বেশি ডিম বা বাচ্চা দিবে এই আশা করাটা বৃথা। পৃথিবীতে কবুতরের প্রায় ১২০টি জাতের মধ্যে আমাদের দেশে কবুতরের ২০টি জাত পাওয়া যায়। এদের মধ্যে কিছু ভাল জাতের কবুতরের নাম নিম্নে উল্লেখ করা হলো-
দেশি জাতের কবুতরের নাম
    • গোলা কবুতর
    • জালালী কবুতর
    • দেশি গিরিবাজ কবুতর
উন্নত জাতের কবুতরের নাম
    • সিরাজ কবুতর
    • গোলা কবুতর
    • ময়ূরপঙ্খী অথবা লাক্কা কবুতর
গিরিবাজ জাতের কবুতর চেনার উপায়
আমরা অনেকেই গিরিবাজ জাতির কবুতর চিনিনা। কবুতরের অনেক জাতের মধ্যে গিরিবাজ জাতটি সবথেকে বেশি উন্নত। গিরিবাজ কবুতরের আকার ছোট এবং লম্বা টাইপের হয়। এছাড়া গিরিবাজ কবুতর অনেক বেশি শক্তিশালী হয়। এতে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকে। তারা ১৫ দিন পর পর ডিম দিতে সক্ষম। কারণ এদের উড়তে পারার ক্ষমতা অন্যান্য কবুতরের চেয়ে বেশি। 
গিরিবাজ জাতটি এক মাসের মধ্যে এক জোড়া ডিম এবং এক জোড়া বাচ্চা দিতে পারে। এবং গিরিবাজ কবুতরগুলো মারা যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। গিরিবাজ কবুতরের লেজ অনেকটা দেখতে নৌকার মতো হয়ে থাকে এবং আপনি যদি এদের লেজে হাত দেন তাহলে এরা লেজ গুটিয়ে নেয় এবং লেজ ছাড়ানোর চেষ্টা করে। 

এদের লেজে হাত দিলে সহজে লেজ খুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই গিরিবাজ কবুতরের লেজে হাত না দেওয়াই ভালো এতে কবুতরের সৌন্দর্য বজায় থাকবে। গিরিবাজ কবুতরটি তাদের বাচ্চাকে বেশি বেশি করে খাবার খাওয়াতে পারে এতে করে বাচ্চা পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার পায় এবং তাড়াতাড়ি বড় হয়। যার কারণে তারা অধিক পুষ্টিকর খাবার খেয়ে বেশি ডিম দিয়ে থাকে। 

এই গিরিবাজের মধ্যেও আরো বেশ কয়েকটি জাত আছে যে জাতগুলা বেশি বাচ্চা দিয়ে থাকে। তাই কবুতর বেশি ডিম দেওয়ার ক্ষেত্রে তার জাত নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন কোন জাতির কবুতরও বেশি বাচ্চা দেয়। 
কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয়
এছাড়া জনপ্রিয় কিছু কবুতরের জাত হলোঃ
    • রেসিং কবুতরঃ রেসিং কবুতরগুলো রেসিং সাম্প্রদায়ের মাঝে খুবই মূল্যবান। এবং এই জাতেরকবুতরগুলো বেশি বেশি বাচ্চা উৎপাদনের জন্য পরিচিত।
    • কিং কবুতরঃ কিং কবুতর একটি রাজকীয় পাখি। কিং কবুতর গুলো দেখতে অনেক সুন্দর হয় এবং বড় আকারের হয়ে থাকে। এই কবিতাগুলো মাঝারি সংখ্যক বাচ্চা উৎপাদন করতে পারে।
    • হোমিং বা হোমা কবুতরঃ হোমিং কবুতরগুলো রেসিং কবুতর নামেও অনেকে চিনে থাকেন। এই হোমি কবুতরগুলো সাধারণত রেসিং এর উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। এদেরকে বাড়ি থেকে অনেক দীর্ঘ দূরত্বে ছেড়ে দিলেও পথ খুঁজে খুঁজে ঠিকই আবার বাড়িতে চলে আসে। পথ খুঁজে পাওয়ার ক্ষমতার জন্য এই হোমিং কবুতরগুলো অত্যন্ত জনপ্রিয়। এই হামিম বা হোমা কবুতরগুলোর সাধারণত প্রতিবছর কয়েকটি বাচ্চা দিতে সক্ষম।
    • ফ্যানটেইল কবুতরঃ ভালো জাতের কবুতরের মধ্যে ফ্যানটেইল কবুতর অন্যতম। ফ্যান্টেইল কবুতর এক ধরনের সৌখিন কবুতর। কেননা এই কবুতরগুলো লেজ দেখতে অত্যন্ত সুন্দর হয়ে থাকে। ফ্যান্টেইল কবুতর হোমিং কবুতরের মত বেশি বাচ্চা উৎপাদন করতে পারে না। কিন্তু বাচ্চা উৎপাদনের পর তাদের অনেক যত্ন নেয়।
    • জালালি কবুতরঃ এই জ্বালালি কবুতরগুলো অনেক বেশি ডিম ও বাচ্চা দিতে পারে। এদের ডিম খুব কম নষ্ট হয়। এবং জালালী কবুতরগুলো ১৫ দিন পর পর ডিম দেওয়া সক্ষমতা রাখে।

ভালো জাতের কবুতর চেনার উপায়

ভাল জাতের কবুতর চেনার উপায়। কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয়? যেহেতু এই বিষয়ে আলোচনা করছে তাই ভালো জাতের কবুতর চেনার উপায় আপনার জানা থাকলে আপনি অনেক লাভবান হবেন। কেননা আপনি যদি বাণিজ্যিকভাবে কবুতর পালন করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই ভাল জাতের কবুতর কিনতে হবে। 

তা না হলে কবুতর পালনে আপনি লাভবান হতে পারবেন না। এছাড়াও ভালো জাতের কবুতর না চিনে কিনলে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দেবে না এবং অধিক অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই চলুন দেখে নেয়া যাক কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দেয়ার জন্য ভালো জাতের কবুতর চেনার উপায়গুলো।
    • যেসব কবুতর ভালো তাদের শরীরের পালকগুলো উজ্জ্বল থাকে।
    • ভালো যাতের কবুতরের চোখ জ্বলজ্বল করে।
    • ভালো যাতের কবুতরের নাকের জায়গা শুষ্ক থাকে। যে সব কবুতরের নাকে সর্দি থাকে সেসব কবুতর না কেনাই ভালো।
    • কবুতর কেনার আগে কবুতর ঠিকভাবে হাঁটতে পারে কিনা সেটি দেখে নিবেন।
    • যে সব কবুতরের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে সেসব কবুতর কিনা থেকে বিরত থাকুন। এজন্য কবুতর কেনার আগে ভালোভাবে কবুতরের শরীর দেখে নিবেন
    • ভালো যাতের কবুতরগুলো নিজের শরীর সবসময় পরিষ্কার রাখে।
    • খাঁচায় বা খোঁপে গুটিসুটি মেরে বসে থাকে এমন কবুতর কখনোই কিনবেন না।
    • ভালো যাতের কবুতরের ডানা শরীরের উপর দিকে থাকবে এবং তারা সচল থাকবে। যেসব কবুতর অসুস্থ তাদের ডানা সাধারণত নিচের দিকে ঝুলে থাকে। তাই সেসব কবুতর কিনা থেকে বিরত থাকুন।

কি খাওয়ালে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম/বাচ্চা দেয়

কি খাওয়ালে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দেয় আমাদের অনেকের অজানা। আমরা অনেকেই বিভিন্ন রকম কবুতর শখ বা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পালন করি। কিন্তু আমরা অনেকেই হয়তো জানিনা কি খাওয়ালে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দিয়ে থাকে। অনেক সময় সঠিক খাবার বা যত্নের অভাবে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম বা বাচ্চা দেয় না। 

অথচ কবুতরের তাড়াতাড়ি ডিম দেয়ার পিছনে তার খাবার সব থেকে বেশি কাজ করে। তাহলে চলুন দেখে নেয়া যাক কি খাওয়ালে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দেয়।
    • কবুতর যদি পর্যাপ্ত পরিমান খাবার পায় তাহলেই কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দিবে। কবুতর থেকে বেশি ডিম পেতে হলে তার খাদ্যের দিকে দৃষ্টি রাখতে হবে।
    • প্রথমেই কবুতরকে পরিষ্কার পাত্রে পরিষ্কার ও স্বচ্ছ পানি দিতে হবে। পানির পাত্র কোনভাবেই ময়লাযুক্ত হওয়া যাবে না। এতে সেখানে মিউক্যাশ জমতে পারে। সকালে খেতে দেওয়া পানি ফেলে দিয়ে দুপুরে আবার নতুন পানি দিতে হবে।
    • কবুতর দিনে প্রায় ৪৫ মিলি পানি পান করে। এজন্য তাকে পর্যাপ্ত পানি দিতে হবে। এতে কবুতরের ডিম দেয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।
    • কবুতরকে নতুন গাছের পাতা বা অঙ্কুরিত গাছ বেশি খাওয়াতে হবে।
    • কবুতর নোনা মাটি খেতে পছন্দ করে । তাকে আবদ্ধ করে পালতে হলে তাকে মাঝেমধ্যেই নোনা মাটি খাওয়াতে হবে।
    • আমরা অনেক সময় কবুতরকে পোকামাকড় খেতে দেই। কবুতরকে পোকামাকড় খেতে দেওয়া যাবে না। পিত্তথলি না থাকার কারণে কবুতর সব খাবার হজম করতে পারে না তার মধ্যে পোকামাকড় অন্যতম।
    • কবুতরকে গম, ভুট্টা, সরিষা দানা, চাউল, সবুজ মটর, সূর্যমুখীর বীজ, অর্থাৎ শর্করা জাতীয় খাবার বেশি খাওয়াতে হবে। এতে করে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দিবে।
    • ডিমের খোসায় রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম। কবুতরকে ডিমের খোসা, ইটের গোড়া, ঝিনুক গুড়া খাওয়ালে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দিবে।
    • এগুলোর সাথে কবুতরকে মাসে চারদিন গ্রিট দিতে হবে। অনেকে ভেবে থাকেন কবুতরকে গ্রিট না দিলেও হয়। গ্রিট কবুতরের খাবার হজমে অত্যন্ত কার্যকরী। এবং খনিজ লবণের অভাব পূরণ করে। এজন্য কবুতরকে গ্রিট দেওয়া প্রয়োজন
    • কবুতরকে মাঝেমধ্যে কালোজিরা, মেথি, মৌরি, চাউল ইত্যাদির মিশ্রণ খাওয়াতে পারেন। কবুতর খেতে না চাইলে পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন।
    • এছাড়া মধু, রসুন, লেবুর রস, কাঁচা হলুদ, এলোভেরা, কাঁচা শাক-সবজি কবুতরের পুষ্টি বাড়াতে সাহায্য করে এবং কবুতরকে সজীব রাখে।
    • সব জাতের কবুতর সব খাবার খেতে পারে না তাই আপনি চাইলে সেসব খাবার গুড়ো করে সরবরাহ করতে পারেন। এবং পানির সাথে মিশিয়ে কবুতরকে খাওয়াতে পারেন।
    • কবুতরকে মাসে দুই থেকে তিন দিন কোন খাবার দেওয়া উচিত নয়। এতে তার হজম শক্তি বেড়াতে সাহায্য করবে।

কবুতরের খাবার নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা যা অনেকেই জানেন না

কবুতরের খাবার নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা যা অনেকেই জানেন না। এতক্ষণ আমরা কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয়, কি খাওয়ালে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দেয় সে সম্পর্কে আলোচনা করেছি। এছাড়াও কবুতরের খাবার নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে যা আমরা অনেকেই হয়তো জানি না তাই চলুন দেখে নেয়া যাক কবুতরের খাবার নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। 

আমরা অনেকেই অনেক সময় ভেবে থাকি কবুতরের জন্য ভালো খাবারের দরকার নেই। অথচ কবুতরের সমস্ত বিষয় অর্থাৎ কবুতরের ডিম দিয়ে বাচ্চা ফুটানো, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সবকিছু নির্ভর করে কবুতরের খাবারের উপর। আমরা সখ করে অথবা বাণিজ্যিকভাবে যে উদ্দেশ্যেই এই কবুতর পালন করি না কেন কবুতরকে অবশ্যই পুষ্টিকর এবং ভালো মানের খাবার দিতে হবে।
    • প্রথমত কবুতরের খাবার দোকান থেকে কিনে এনে ভালোভাবে ধুয়ে নিবেন এবং রোদ্রে শুকাতে দিবেন।তারপর কবুতরকে খাওয়াবেন। কেননা বাজারে যেভাবে সংরক্ষণ করা হয় এতে খাবার জীবাণু জন্মাতে পারে। তাই সরাসরি কবুতরকে সেই খাবার না খেতে দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে তারপর খেতে দিবেন নয়তো কবুতর বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
    • এছাড়া শস্যদানা সংরক্ষণ করার জন্য বিভিন্ন রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়ে থেকে যা কবুতরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এছাড়া আপনি যদি আপনার কবুতরকে সরাসরি ভাঙ্গা ভুট্টা খেতে দেন তাহলে অবশ্যই সেদ্ধ করে তারপর খেতে দিবেন। কেননা ভাঙ্গা ভুট্টাই অনেক রোগ জীবাণু থাকে এতে করে আপনার কবুতর সাল্মনেলিসিস ও রক্ত আমাশয়ের মত মারাত্মক রোগী আক্রান্ত হতে পারে।
    • কবুতরকে কমপক্ষে দিনে দুইবার খাবার দিবেন। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আপনারা যারা কবুতর আকাশে উড়িয়ে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে কবুতরকে একসাথে বেশি খাবার দেয়া একদমই উচিত নয়। কবুতরকে পরিমাণ মতো খাবার দিবেন এটাই খাবারের অপচয় ও কম হবে।
    • কবুতরকে পরিমাণ মতো পানি পান করতে দিবেন একসাথে বেশি পানি খেতে দেয়া উচিত নয়
    • কবুতরকে শর্করা জাতীয় খাবার ৭৫% দিতে হবে। শর্করা জাতীয় খাবার গুলো হল গম ভুট্টা সবুজ মটর চাউল ইত্যাদি।
    • তেলবীজ সমৃদ্ধ খাবার ২৫% দিতে হবে। তেলবীজ জাতীয় খাবার গুলো হলো সরিষা, সূর্যমুখী, কুসুম ফুলের বীজ ইত্যাদি।
    • অনেকে মনে করে হাঁস মুরগি ও পাখি । কবুতরও পাখি। তাই হাঁস মুরগির খাবা কোন ওষুধ খাওয়ালে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দেয় কিভাবে যত্ন নিলে কবুতর পালন বেশি লাভজনক হবের খাওয়ালেই হয়তো কবুতর বেশি ডিম দিবে। কবুতরের পাকস্থলী সম্পূর্ণ আলাদা তাই তাদের হাঁস মুরগির খাবার খাওয়াবেন না।
    • কবুতরের খাবারের তালিকায় রেজার রাখবেন না কেননা এতে কোন পুষ্টিগুণ নেই বরং এটি রোগ জীবাণু বহন করে।
    • আমরা অনেকেই কবুতর মোটা তাজা করণে কবুতরকে বয়লার গ্রোয়ার খেতে দেই। বয়লার গ্রোয়ার সাধারণত হাঁস মুরগির জন্য তৈরি। আর হাস মুরগি যা হজম করতে পারে কবুতর তা হজম করতে পারে না। এতে করে কবুতরের উপর খারাপ প্রভাব পড়বে।
    • কবুতরকে বয়লার গ্রোয়ার খাওয়ালে কবুতরের পায়খানা নাপাক হয়ে যায়। আমরা বাসা বাড়িতে যেসব কবুতর ছেড়ে পালি সেসব কবুতর অনেক সময় আমাদের ঘাড়ে এসে বসে এবং আমাদের কাপড়-চোপড়েও বসে থাকে। আমরা যারা মুসলিম আছি বিশেষ করে যারা নামাজ পড়ি তাদের অবশ্যই এই বিষয়টি খেয়াল রাখা উচিত।

কোন জাতের কবুতর পালন লাভজনক

কোন জাতের কবুতর পালন লাভজনক। কবুতর পালন পদ্ধতি একটি লাভজনক উদ্বেগ হতে পারে। তবে কোন জাতের কবুতর পালন লাভজনক সে সম্পর্কে সঠিক ধারণা না নিয়ে যদি আপনি কবুতর পালন করেন তাহলে লাভজনক হতে পারবেন না। কবুতর পালন লাভজনক করতে হলে আমাদের সবার প্রথম ভালো জাতের কবুতর নির্বাচন করতে হবে। 

ময়ূরপঙ্খী, গিরিবাজ, লোটন, মুকি, সিরাজি, গোলা, জ্যাকবিন এই কবুতর গুলো পালন বেশি লাভজনক হয়ে থাকে। এই কবুতরগুলোর দাম সাধারণত একটু বেশি হয়ে থাকে। যারা চিন্তাভাবনা করছেন কোন জাতের কবুতর পালন লাভজনক হবে তারা এই ভালো জাতের কবুতর নিয়ে খামার তৈরি করলে অধিক লাভবান হবেন। কেননা বর্তমান সময়ে এই জাতের কবুতরগুলো চাহিদা অনেক বেশি থাকে। 
কোন জাতের কবুতর পালন লাভজনক
এছাড়া কবুতর পালন লাভজনক করতে আরও কিছু বিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে-
    • বাজারের চাহিদাঃ রেসিং পায়রা গুলো বর্তমান বাজারে চাহিদা বেশি থাকে। কেননা রেসিং কবুতরের মাঝে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি খেলা হয়ে উঠেছে। যারা রেসিং খেলায় উৎসাহী তারা অনেক চড়া দামে এই কবুতরগুলো কিনে থাকেন। উচ্চ চাহিদার জন্য এই জাতের কবুতর পালনে অনেক বেশি লাভবান হওয়া যায়।
    • কম বিনিয়োগ খরচঃ কবুতর পালনের অন্যতম একটি সুবিধা হল কম বিনিয়োগ খরচ। কবুতর অনেক কম খরচে পালন করা যায়। একটি ছোট জায়গায় এদের বাসা তৈরি করে রাখা যায়। এছাড়াও খাবার এবং পানি পাত্র গুলো সাশ্রয়ী। তাই আপনার সঠিক ভাবে পরিকল্পনা এবং দক্ষ ব্যবস্থাপনার দ্বারা কম বিনিয়োগে ভাল জাতের কবুতর পালন করে অনেক বেশি লাভবান হতে পারেন।
    • প্রজনন এবং প্রজননঃ এক জোড়া কবুতর প্রতি বছর একাধিক ডিম উৎপাদন করতে পারে এবং সেই ডিম থেকে বাচ্চা বড় হয়ে সেই বাচ্চাটি ভালো দামে বিক্রি করা সম্ভব। এতে করে আপনি কবুতর পালনে লাভবান হবেন।
    • বিপণন ও ব্র্যান্ডিংঃ বিপণন ও ব্র্যান্ডিং কৌশলগুলো যেকোনো ধরনের ব্যবসায় সাফল্য এনে দিতে অত্যন্ত কার্যকরী। আপনি একটি ব্যান্ডিং ইমেজ তৈরি করে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে পারেন। এভাবে আপনি কবুতর পালনে অনেক বেশি লাভবান হতে পারেন।

কোন ঔষধ খাওয়ালে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দেয়

কোন ঔষধ খাওয়ালে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দেয় তা আমাদের অনেকের প্রশ্ন। অনেক সময় দেখা যায় কবুতরের সঠিক যত্ন নেয়ার পরও কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দেয় না। তাই আমি এখন আপনাদের সাথে আমি একটি ঔষধের কথা শেয়ার করব যেটা খাওয়ালে আপনার কবুতর ২ সপ্তাহের মধ্যেই ডিম পারবে। আমরা যেমন অসুস্থ হলে ঔষধ খেয়ে থাকি ঠিক তেমনি কবুতর পুষ্টিহীনতায় ভুগলে তাকে ঔষধ খাওয়াতে হবে।
 
আর পুষ্টিহীনতা দূর হলেই কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দিবে। তাহলে চলুন দেখে নিয়ে যাক কোন ওষুধ খাওয়ালে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দেয়। কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দেওয়ার জন্য ভিটামিন ই ক্যাপসুল ম্যাজিক এর মত কাজ করে। ভালোবাসা করছি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন কোন ওষুধ খাওয়ালে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দিবে।

কবুতরের তাড়াতাড়ি ডিম দেওয়ার জন্য ঔষধ ব্যবহারের নিয়ম

আমরা তো কোন ওষুধ খাওয়ালে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দেয় সে সম্পর্কে জানলাম। কবুতরের তাড়াতাড়ি ডিম দেওয়ার জন্য ঔষধ ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে এখন আলোচনা করব। এইজন্য আপনাকে একটি ২৫০ গ্রামের ই ক্যাপসুল খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে কবুতরকে খাওয়াতে হবে। এই ঔষধ মিশ্রিত খাবারটি ১ থেকে ২ দিন ১০ গ্রাম করে খাওয়াতে হবে। ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশ্রিত খাবার খাওয়ানোর ফলে কবুতরের শরীর গরম হবে এবং এরা ঘন ঘন ব্রিডিং করবে। 

ঔষধ খাওয়ানো ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই কবুতর ডিম দিবে বলে আশা করছি। ভিটামিন ই ক্যাপসুল খালি পেটে খাওয়ান কিন্তু প্রতিদিন খাওয়ানো যাবে না, এতে কবুতরের ওপর খারাপ প্রভাব পড়বে। এছাড়া পানিতে এক ফোঁটা করে পটাশ মিশিয়ে কবুতরকে খাওয়ালে তা কবুতরকে সহজেই ডিম পারতে সাহায্য করবে।

কিভাবে যত্ন নিলে কবুতর পালন বেশি লাভজনক হবে

কিভাবে যত্ন নিলে কবুতর পালন বেশি লাভজনক হবে তা কি জানেন? দেখুন কোন কবুতর যদি পুষ্টিহীনতায় ভোগে তাহলে সেই কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দেওয়ার ক্ষমতা রাখে না। যখন দেখবেন কবুতর ঝিমাচ্ছে, এক কোনায় চুপ করে বসে আছে, কোন খাবার ঠিকমতো খাচ্ছে না তখন বুঝবেন কবুতর পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। 

এবং কবুতর পালনে লাভবান হতে হলে আপনাকে অবশ্যই কবুতরের যত্ন ভালোভাবে নিতে হবে। তার জন্য আপনাকে তাদের দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। তাদের বাসায় থাকতে সমস্যা হচ্ছে কিনা, তাদের পোকামাকড় খেতে দেওয়া যাবে না, তারা কোথাও আঘাত পেলে সেখানে ঔষধ লাগিয়ে দিতে হবে, তাদের লোমগুলো পরিষ্কার রাখতে হবে।

তাদের শরীরে যেন খাবার না লেগে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং প্রতিদিন তাদের বাসস্থান পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে যাতে এই রোগ জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত কম হয়। সর্বোপরি তাদের সঠিক পরিচর্যা করতে হবে তাহলে কবুতর তাড়াতাড়ি ও বেশি ডিম বা বাচ্চা দিবে। এবং আপনি অধিক লাভবান হতে পারবেন।

কবুতর পালন লাভজনক করতে তাদের বাসস্থান

কবুতর পালন লাভজনক করতে তাদের বাসস্থানটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তার বাসা যদি আরামদায়ক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং স্ত্রী ও পুরুষ কবুতরের থাকার পর্যাপ্ত জায়গা থাকে তাহলে কবুতর বেশি ডিম দিতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। এক জোড়া কবুতরের জন্য ১ফুট দৈর্ঘ্য ১ফুট প্রস্থ এবং ১ফুট উচ্চতা সম্পন্ন খোপ বানাবেন।

এবং একটি গ্রুপে যদি ২ জোড়া কবুতর রাখতে চান তাহলে ২ফুট উচ্চতা ১ ফুট প্রস্থ এবং 17 ইঞ্চি উচ্চতা রেখে মাঝখানে দেওয়াল দিয়ে দিবেন। একটি খোপের মধ্যে ২জোড়া কবুতর রাখবেন। খোপের মধ্যে কবুতরের যাওয়া আসার জন্য ৫ ইঞ্চি দরজা রাখা ভালো। কবুতরের ঘরের সামনে পানি ও খাবারের পাত্র রাখতে হবে যাতে সে যেকোনো সময় খাবার খেতে পারে। 

কবুতরের ঘর আরামদায়ক ভাবে বানাতে হবে এবং প্রতিদিন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। নয়তো বিভিন্ন রোগ জীবাণুতে কবুতর আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কবুতরের ঘরে যাতে পর্যাপ্ত আলো বাতাস পায় সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে। উপরের নিয়মগুলো মেনে যদি আপনি বাসস্থান তৈরি করতে পারেন তাহলে কবুতর পালন করতে অনেক সুবিধা হবে এবং কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দিবে।

কবুতরকে রসুন খাওয়ালে কি হয়

কবুতরকে রসুন খাওয়ালে কি হয় জানেন কি? এতক্ষণ আমরা কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয়, কি খাওয়ালে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দেয়, কোন জাতের কবুতর পালন লাভজন, কিভাবে যত্ন নিলে কবুতর পালন বেশি লাভজনক হবে সে সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়ার চেষ্টা করেছি। তাহলে চলুন এখন জেনে নেয়া যাক কবুতরকে রসুন খাওয়ালে কি হয়।

কবুতরকে রসুন খাওয়ালে তা কবুতরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অনেক গুণে বাড়িয়ে দেয়। এজন্য কবুতরকে রসুন খাওয়ানোর ক্ষেত্রে রসুন কুচিকুচি করে কেটে খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে। এভাবে সপ্তাহে একদিন বা দুইদিন খাওয়াতে পারেন। এতে কবুতরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে এবং কবুতর কম অসুস্থ হবে। কোন কবুতর যদি অসুস্থ থাকে তাহলে কবুতরকে রসুন কুচি কুচি করে কেটে খাওয়ালে তাড়াতাড়ি সুস্থ হতে সাহায্য করে।

কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় সে সম্পর্কে কিছু সাধারন প্রশ্ন উত্তর

প্রশ্নঃ কবুতর কত দিন পর পর বাচ্চা দেয়?
উত্তরঃ একটি কবুতরের বয়স পাঁচ থেকে ছয় মাস হলে ডিম দিয়ে থাকে এক্ষেত্রে গড়ে প্রতিমাসে একটি কবুতর ১বার ডিম দেয়। বাচ্চাটির বয়স ২৫/২৬ দিন হলে তাকে তার মায়ের থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। এবং মা কবুতরটি আবার নতুন করে ডিম দেয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকে।

প্রশ্নঃ কবুতর মারা যাবার সবথেকে বেশি কারণ কি?
উত্তরঃ কবুতর যদি অপুষ্ট হীনতায় ভোগে এবং বেশি বেশি অসুস্থ হয় তাহলে সেই কবুতরটি তাড়াতাড়ি মারা যাবার সম্ভাবনা থাকে।

প্রশ্নঃ কবুতরের সর্বোচ্চ বয়স কত?
উত্তরঃ মানুষ যদি হস্তক্ষেপ না করে এবং প্রাকৃতিক শিকারের সম্মুখীন না হয় তাহলে একটি কবুতরের গড় আয়ু সাধারণত ছয় বছর হয়ে থাকে। এছাড়াও একটি কবুতর ৩-৫ বছর হতে পারে অথবা ১৫ বছর ও হতে পারে

প্রশ্নঃ কবুতরের বাচ্চাকে দিনে কতবার খাওয়ানো উচিত?
উত্তরঃ একটি বাজা কবুতর কে সাধারণত দিনে চারবার খাওয়ানো উচিত।

প্রশ্নঃ কবুতরের পক্স কতদিন থাকে?
উত্তরঃ কবুতরের যদি পক্স হয়ে থাকে তাহলে সেটি ৪-৬ সপ্তা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।

প্রশ্নঃ রেসিং কবুতরের জন্য কোন খাবার ভালো?
উত্তরঃ রেসিং কবুতরের জন্য১২-১৪% প্রোটিন প্রয়োজন হয়। এতে সে ভালো উড়ার ক্ষমতা রাখে।

কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় সে সম্পর্কে আমার নিজস্ব অভিমত

আজকের এই আর্টিকেলে কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় , ভালো জাতের কবুতর চেনার উপায়, কোন জাতের কবুতর পালন লাভজনক, কি খাওয়ালে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দেয়, কিভাবে যত্ন নিলে কবুতর পালন বেশি লাভজনক হবে, কবুতরের খাবার নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা যা অনেকেই জানেন না, কোন ওষুধ খাওয়ালে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দেয়, কবিতার পালন লাভজনক করতে তাদের বাসস্থান কেমন হবে সে সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি।

সর্বশেষে কবুতর আপনার শখের প্রাণী। আর আপনি যদি বাণিজ্যিকভাবে কবুতর পালনে লাভবান হতে চান তাহলে অবশ্যই ভালো জাতের কবুতর কিনবেন তাহলে কবুতর বেশি বাচ্চা দিবে এবং তাড়াতাড়ি লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এছাড়াও কবুতরকে শর্করা সুষম জাতীয় খাবার এবং সঠিক ভাবে পরিচর্যা করবেন তাহলে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দিবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাল্টিম্যাক্স আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।

comment url