গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির ১৫টি চমকপ্রদ উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম
গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? গর্ভাবস্থায় ডাবের
শাঁস খাওয়ার উপকারিতা কি ? চলুন তাহলে জেনে নেই গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির
উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে এছাড়াও আরো জানাবো গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির
অপকারিতা সম্পর্কে।
গর্ভাবস্থায় যেকোন খাবারকে সন্দেহের চোখে দেখা হয়। কেননা সবাই গর্ভাবস্থায়
সচেতন থাকতে চাই যাতে বাচ্চা ও মায়ের কোন ধরনের ক্ষতি না হয়। তেমনি ভাবে ডাবের
পানি খাওয়া সম্পর্কেও অনেকে বিভিন্ন ধরনের মতবাদ প্রকাশ করে থাকেন। চলুন তাহলে
জেনে আসি গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
পোস্ট সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা/গর্ভাবস্থায় ডাবের শাঁস খাওয়ার উপকারিতা
- ডাবের পানির পুষ্টিগুণ সম্পর্কে অজানা কিছু তথ্য
- গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় কি পরিমান ডাবের পানি পান করা উচিত
- ডাবের পানি সংরক্ষণের সেরা উপায়
- গর্ভাবস্থায় ডাবের শাঁস খাওয়ার উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি কতটা নিরাপদ
- গর্ভাবস্থায় ডাবের শাঁস খাওয়া যাবে কি
- গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির অপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন উত্তর
- গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমার নিজস্ব অভিমত
ডাবের পানির পুষ্টিগুণ সম্পর্কে অজানা কিছু তথ্য
ডাবের পানির পুষ্টিগুণ। গর্ভবতী কালীন সময়ে শরীরে যেন পানি শূন্যতার অভাব দেখা
না দেয় সেদিকে খেয়াল রাখা ভীষণ জরুরি। এজন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতেই
হবে। এর পাশাপাশি পান করতে পারেন ডাবের পানি। বিশেষজ্ঞদের মতে ডাবের পানির
গর্ভাবস্থায় ভীষণভাবে উপকারী। ডাবের পানির মধ্যে থাকা সকল পুষ্টিগুণ গর্ভাবস্থায় একে
শরীরের জন্য এতটা উপকারী করে তোলে।
বহুকাল আগে থেকেই স্বাস্থ্য ও ডাবের পানির মধ্যে একটি প্রাচীন ইতিবাচক সম্পর্ক
টানা হয়। ডাবের পানি একটি সুষম পুষ্টিকর পানিই নয় বরং এটি খুব সজাতকারকও।
যারা কর্মজীবী মহিলা রয়েছেন তারা নিজেদের প্রয়োজনীয়তার খেয়াল খুব অল্প
সময়ে রাখতে পারেন। প্রতিদিন এক গ্লাস ডাবের পানি পান করার ফলে সকল ক্লান্তি
দূর হয় এবং শরীর সুস্থ থাকে।
গবেষকরা বলেছেন ডাবের পানি শরীরের হাইড্রেশনে অনেক বেশি সাহায্য করা একটি
কার্যকরী পানীয়। ডাবের পানিতে রয়েছে বিশাল স্বাস্থ্য গুণ। নিয়মিত ডাবের পানি
খেলে শরীর বিষমুক্ত হবে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। অনেক রোগ আস্তে
আস্তে সরে যাবে আপনার শরীর থেকে।
ডাবের পানি পুষ্টি উপাদান (প্রতি ১০০ মিলি লিটার)
ক্যালোরিঃ ১৭-২০ ক্যালরি
পানিঃ ৯৪-৯৫%
কার্বোহাইড্রেটঃ ৩.৭ গ্রাম
প্রোটিনঃ ০.২ গ্রাম
ফ্যাটঃ ০.১ গ্রাম
ফাইবারঃ 0.1 গ্রাম
ক্যালসিয়ামঃ ২৪ মিলিগ্রাম
পটাশিয়ামঃ 250-300 মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়ামঃ ২৫ মিলিগ্রাম
সোডিয়ামঃ ১০৫ মিলিগ্রাম
ভিটামিন সিঃ ২ থেকে ৩ মিলিগ্রাম
ডাবের নরম শ্বাসের পুষ্টি উপাদান (প্রতি ১০০ গ্রাম)
ক্যালোরিঃ ৪৩ থেকে ৫০ ক্যালোরি
কার্বোহাইড্রেটঃ ৬-৭ গ্রাম
প্রোটিনঃ ৩ গ্রাম
ফ্যাটঃ ৩ থেকে ৪ গ্রাম
ফাইবারঃ ১ গ্রাম
পটাশিয়ামঃ ২৫০ মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়ামঃ ১০ থেকে ১৫ মিলিগ্রাম
আয়রনঃ ০.৩ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়ামঃ ২০- ২৫ মিলিগ্রাম
ডাবের পানি ও শাঁস দুটোই শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। বিশেষ করে ডাবের পানি
প্রাকৃতিক ইলেকট্রোলাইট সমৃদ্ধ যা শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে অনেক বেশি সাহায্য
করে।
গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা কি? গর্ভাবস্থায় বাচ্চা ও মায়ের স্বাস্থ্য
ধরে রাখতে মনোযোগী হতে হয়। ফলে খাওয়া-দাওয়ার প্রতি একটু সচেতনতা অবলম্বন
করতে হয়। এজন্য গর্ভবতীকালীন সময়ে ডায়েটে অনেক বিষয়কে শামিল করা হয়।
তার মধ্যে ডাবের পানি অন্যতম একটি খাবার। ডাবের পানি পান করার ফলে শরীরে
ইলেকট্রোলাইট ও তরলের ভারসাম্য স্বাভাবিক থাকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে গর্ভাবস্থায় নারীদেরকে গর্ভধারণের তৃতীয় মাস থেকেই ডাবের
পানি পান করা উচিত কেননা এই সময়টাই শরীরে পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি
থাকে। এতে করে মা ও বাচ্চা দুজনই পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে। গর্ভাবস্থায়
একজন নারীর কেন ডাবের পানি পান করা উচিত গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা
গুলো সম্পর্কে জেনে নিন-
বুক জ্বালাপোড়া কমায়ঃ বুক জ্বালাপোড়া করা গর্ভাবস্থায় অন্যতম একটি
সমস্যা। এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে ডাবের পানি। ডাবের পানি খেলে হজমের
সমস্যা এবং বুক জ্বালাপোড়া সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব।
পানি শূন্যতা কমায়ঃ গর্ভাবস্থায় পানি শূন্যতা খুব প্রচলিত একটি
সমস্যা। গর্ভকালীন সময়ে মায়ের পানির চাহিদা অন্য সবার থেকে বেশি থাকে। কেননা
তার নিজের চাহিদার সঙ্গে তার অনাগত শিশুর পানির চাহিদা পূরণ করতে হয়। ডাবের
পানির মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই পানি শূন্যতা প্রতিরোধ করতে পারেন।
শরীর কর্মক্ষম রাখেঃ গর্ভকালীন সময়ে নিজেকে অনেক বেশি
কর্মক্ষম রাখতে ডাবের পানির বিকল্প নেই। ডাবের পানির মধ্যে থাকা
ইলেকট্রোলাইট উপাদানের কারণে শরীরের কাজ করার ক্ষমতা অনেক বেশি বেড়ে যায়।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ ডাবের পানির মধ্যে থাকা পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেক বেশি সাহায্য করে। এছাড়া ডাবের পানি
মূত্রনালীর সংক্রমণ প্রতিরোধ করতেও অনেক বেশি কার্যকরী।
হজমে সহায়তা করেঃ গ্রীষ্মকালে প্রচন্ড রোদ্রের কারণে শরীরে তরলের ঘাটতি
দেখা দেয় এবং শরীর আদ্রতা হারায়। ডাবের পানি শরীরের আদ্রতা বজায় রাখে এবং
তরল উপাদানের ভারসাম্য ঠিক রাখে। এছাড়াও শরীরে থাকা বিভিন্ন ক্ষতিকারক উপাদান
বের করতে ডাবের পানি অত্যন্ত কার্যকরী একটি পানীয়।
উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ করেঃ গর্ভাবস্থায় মহিলাদের উচ্চ রক্তচাপ বা
হাইপারটেশন সমস্যা দেখা দেয়। উচ্চ রক্তচাপ বাচ্চা এবং মা উভয়ের জন্যই
ক্ষতির কারণ হতে পারে। ডাবের পানি উচ্চ রক্তচাপ কমায় হাইপারটেশন হ্রাস করতে
অনেক বেশি কার্যকরী।
ওজন ঠিক রাখেঃ গর্ভাবস্থায় নারীদের সঠিক ওজন বজায় রাখা একটি
চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। অনেকের ওজন অনেক বেশি বেড়ে যায় আবার কারোর
ওজন একেবারে কমে যায়। ডাবের পানি ওজন ধরে রাখতে অনেক বেশি সহায়তা করে। ডাবের
পানির মধ্যে জিরো ফ্যাট ও কোলেস্টেরল রয়েছে তাই এটি পান করার ফলে ওজন বৃদ্ধি
হবার কোন রকম ভয় নেই। তাই নির্ভয়ে আপনি প্রতিদিন এটি পান করতে পারেন।
ক্যালসিয়ামের ভালো উৎসঃ ডাবের পানিতে ক্যালসিয়াম থাকে প্রচুর পরিমাণে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন ডাবের পানি ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস। আপনি যদি নিয়মিত
ডাবের পানি খান তাহলে একটি শরীরে ক্যালসিয়ামের যোগান দিবে।
শরীরের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখেঃ গর্ভাবস্থায় নারীদের শরীরে আয়রনের
পরিমাণের চাহিদা অনেক বেশি বেড়ে যায় প্রায় ৫০ শতাংশ। এতে করে গর্ভবতী
নারীদের পা এবং পায়ের পাতা ফুলে যাওয়ার লক্ষণ দেখা দেয়। শরীরে যদি রক্ত
চলাচল এই সময় কম হয় তাহলে পায়ে অথবা জয়েন্টে ব্যথা দেখা দেয়। গর্ভকালীন
সময়ে ডাবের পানি পান করলে শরীরের রক্ত চলাচলের গতি স্বাভাবিক রাখে এবং পা
ব্যথা ও পা ফোলার মত বিভিন্ন সমস্যা থেকে নিরাময় পাওয়া যায়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ ডাবের পানির মধ্যে লিউরিক এসিড
রয়েছে। যার অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
গর্ভাবস্থায় ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতেঃ গর্ভাবস্থায় নিয়মিত
ডাবের পানি খেলে এটি শরীরকে হাইড্রেট রাখবে। যার ফলে গর্ভের সন্তানের ত্বকের
স্থিতিস্থাপকতা বাড়ে এবং গর্ভধারণের সময় স্ট্রেস মার্ক কম করে। গর্ভাবস্থায়
হরমোন জনিত কারণে অনেকের ত্বকে ব্রণ র্যাশ হতে পারে। ডাবের পানি শরীরের ভেতর
থেকে ত্বক পরিষ্কার ও হাইড্রেট রাখে ফলে ত্বকের সমস্যা কমে।
মাতৃদুগ্ধ তৈরিতেঃ গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়া মাতৃদুগ্ধ তৈরিতে
বিশেষভাবে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
মূত্রনালী সংক্রমণ প্রতিরোধ করেঃ গর্ভাবস্থায় অনেক মায়ের প্রস্রাবের
সংক্রমণ হতে পারে। ডাবের পানি প্রাকৃতিকভাবে শরীর পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে
এবং UTI এর ঝুঁকি কমায়।
বাচ্চার বৃদ্ধিতে সহায়তা করেঃ ডাবের পানিতে ভিটামিন ও মিনারেল যেমন
ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ইত্যাদি থাকে যা শিশুর হাড় ও মস্তিষ্কের
বিকাশের সহায়তা করে।
গর্ভাবস্থায় কি পরিমান ডাবের পানি পান করা উচিত
গর্ভাবস্থায় কি পরিমান ডাবের পানি পান করা উচিত তা কি আপনি জানেন? ইতিমধ্যে
আমরা গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি। চলুন
তাহলে এখন ডাবের পানি কখন খাওয়া ভালো, ডাবের পানি সংরক্ষণের উপায় এবং ডাবের
পানি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই-
ডাবের পানি কখন খাওয়া ভালো
ডাবের পানি খাওয়া নিয়ে সবার মধ্যেই প্রায় বিভিন্ন ধরনের সংশয় কাজ করে।
ডাবের পানি খাওয়ার সময় অনেকেই চিন্তাভাবনা করেন যে কখন এবং কিভাবে খেলে
আমাদের শরীরের জন্য ভালো হবে। ডাবের পানি খাওয়ার সেই রকম নিয়মাবলী নেই। যেকোন
সময় খেলেই আমাদের শরীরের জন্য উপকারিতা বয়ে আনবে।
ডাবের পানি পান করার সেরা সময় নির্ভর করে আপনার স্বাস্থ্যের লক্ষ্য ও
প্রয়োজনের উপর। তবে সাধারণত কিছু সময় বিশেষভাবে উপকারী হতে পারে।
- সকাল বেলাঃ আপনি যদি সকাল বেলা খালি পেটে ডাবের পানি খেতে পারেন তা বেশি কার্যকরী হবে বলে আশা করছি। সকাল বেলা শুধু পানি না খেয়ে ডাবের পানি খাওয়ার মতামত দিয়ে থাকে পুষ্টিবিদরা। এতে করে দ্রুত হজম হয় আমাদের শরীরের জন্য কাজ করার সুযোগ পায়।
- গর্ভাবস্থায় ডাবের পানিঃ গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি পান করার ভালো সময় হতে পারে সকাল বেলা। কেননা ডাবের পানিতে ইলেকট্রোলাইট এবং পুষ্টি থাকে যা খালি পেটে খেলে খুব সহজে শোষিত হতে সাহায্য করে।
- সকালে খালি পেটেঃ সকালে খালি পেটে ডাবের পানি খেলে শরীরকে ডিটক্স করতে সাহায্য করে। হজম শক্তি বাড়ায় এবং মেটাবলিজম যেমন উন্নত করে এছাড়াও শরীরকে হাইডেটেড রাখে এবং এনার্জি বাড়ায়।
- ওয়ার্কআউট এর আগে বা পরেঃ ওয়ার্কআউট এর আগে খেলে শক্তি বাড়ায়। পরে খেলে ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্য বজায় রাখে ও ক্লান্তিকমায়।
- গরম আবহাওয়া বা রোদেঃ গরম আবহাওয়া বা রোদে বাইরে থাকার পর শরীরে পানির অভাব পূরণ করে হিট স্ট্রোক প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।
ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম
প্রত্যেকটা খাবারের পূর্বে কিছু নিয়মাবলী থাকে। নিয়ম মেনে খেলে আমাদের শরীরের
জন্য ভালো উপকারিতা বয়ে আনে। কিন্তু নিয়ম মেনে না খেলে শরীরের জন্য ক্ষতির
কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। প্রতিদিন নিয়ম মেনে গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি পান করা
অনেক উপকারিতা বইয়ে আনতে পারে। তাহলে ডাবের পানি খাওয়ার কয়েকটি নিয়ম
সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক-
- খালি পেটে পান করাঃ সকালে খালি পেটে ১ গ্লাস ডাবের পানি পান করলে শরীর ডিটক্স হয়। হজম শক্তি ভালো হয় এবং কিডনি পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। যাদের গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটির সমস্যা আছে তারা খাবারের ৩০ মিনিট পর পান করতে পারেন এতে করে ভালো উপকার পাবেন।
- খাবারের আগে বা পরেঃ সময় মেনে পান করা খাবারের ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট আগে পান করলে হজম শক্তি বারে খাবারের পরপরই পান না করাই ভালো এতে হজমের সমস্যা হতে পারে ভারী খাবারের এক ঘন্টা পর ডাবের পানি খাওয়া ভালো।
- ব্যায়ামের আগে ও পরেঃ ওয়ার্কআউট এর আগে শক্তি বৃদ্ধি করে ও পানি শূন্যতা রোধ করে। পর্দা উটের পরে শরীরে ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্স বজায় রাখে ও ক্লান্তি কমায়।
- অসুস্থ অবস্থায়ঃ জর, ডায়রিয়া বা বমির পর ইলেকট্রোলাইটের অভাব পূরণ করে কিডনির সমস্যা থাকলে যেমন স্টোন বা সংক্রমণ ডাবের পানি উপকারী হতে পারে। তবে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া ভালো।
ডাবের পানি সংরক্ষণের উপায়
আমাদের দেশে গ্রীষ্মকালে চাহিদা ব্যাপক থাকে ডাবের পানির। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে
কোমল ও সতেজ পানীয় হিসেবে ডাবের পানি ব্যাপক চাহিদা লক্ষ্য করা যায়। ডাবের
পানি শরীরকে ঠান্ডা রাখতে অনেক বেশি সাহায্য করে এবং আমাদের দেহের তাপমাত্রা
নিয়ন্ত্রণে রাখে। এছাড়াও বৃদ্ধি ব্যক্তি, ডায়রিয়া আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য
এবং গর্ভবতী মহিলাদের জন্য বেশ কার্যকরী একটি পানীয় এই ডাবের পানি।
ডাবের পানি খুবই সংবেদনশীল এবং খোলার পর দ্রুত নষ্ট হতে শুরু করে তবে কিছু সঠিক
পদ্ধতি অনুসরণ করলে কিছু সময়ের জন্য এটি সংরক্ষণ করা সম্ভব। নিচে ডাবের
পানি সংরক্ষণের কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপায় সম্পর্কে বলা হলো-
- ফ্রিজে সংরক্ষণ (কম সময়ের জন্য)ঃ ডাবের পানি খোলার পর পরই ফ্রিজে রাখলে ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত ভালো থাকে। সংরক্ষণ করতে কাঁচের বোতল বা স্টেইনলের স্টিলের পাত্র ব্যবহার করুন। প্লাস্টিকের বোতলে রাখলে স্বাদ নষ্ট হতে পারে। সংরক্ষণের আগে মুখ বন্ধ পাত্রে রাখুন যাতে বাতাস প্রবেশ করতে না পারে।
- ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ (দীর্ঘ সময়ের জন্য)ঃ দীর্ঘ সময় সংরক্ষণ করতে ডিপ ফ্রিজ রেখে বরফ তৈরি করা যায়। আইস কিউব ট্রেতে ঢেলে ফ্রিজে রেখে দিন পরে স্মোদি বা শরবতে ব্যবহার করতে পারেন।১-২ মাস পর্যন্ত ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করা সম্ভব। তবে সাদ কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে।
- লেবুর রস মিশিয়ে সংরক্ষণঃ কিছুটা লেবুর রস মিশিয়ে দিলে ডাবের পানির অক্সিডেশন কমে এবং নষ্ট হতে সময় লাগে। বিশেষ করে ফ্রিজে রাখার সময় এই পদ্ধতি কার্যকর।
- ভ্যাকুয়াম সিল বা এয়ারটাইট বোতল ব্যবহার করাঃ ডাবের পানি সংরক্ষণের জন্য এয়ারটাইট বা ভ্যাকুয়াম বোতলে রাখলে এটি বেশি সময় টাটকা থাকে ফ্রিজে রাখার আগে বায়ুর সংস্পর্শ থেকে দূরে রাখা জরুরি।
- সংরক্ষিত অবস্থায় ব্যবহারের নিয়মঃ ফ্রিজ থেকে বের করে নেওয়ার পর দ্রুত পান করা উচিত। ২-৩ ঘন্টার বেশি রুম টেম্পারেচারে না রাখা ভালো। এতে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হতে পারে সাদ বা গন্ধ পরিবর্তন হলে পান না করাই ভালো।
ডাবের পানি তাজা অবস্থায় খাওয়ায় সর্বোত্তম। তবে ফ্রিজ বা ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ
করে কিছুটা সময় পর্যন্ত রাখা যায় সংরক্ষণের জন্য বায়ুর সংস্পর্শ এড়ানো এবং
পরিষ্কারপাত্র ব্যবহার করা জরুরী। এছাড়াও আরো জানবো গর্ভাবস্থায়ী ডাবের পানির অপকারিতা সম্পর্কে।
গর্ভাবস্থায় ডাবের শাঁস খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় ডাবের শাঁস খাওয়ার উপকারিতা ব্যাপক। গর্ভাবস্থায় নারীদের খাওয়া
দাওয়া ওর বেশ কিছু বিধি নিষেধ থাকে। খাদ্যে অরুচি, গ্যাসের সমস্যা, বমি বমি
ভাব বিভিন্ন কারণে এই সময় ঠিকমতো খাবার খেতে পারেন না অনেকেই। এই জন্য এই
সময়টাই এমন সব খাবার খাওয়া দরকার যা মা এবং শিশু দুইজনের জন্যই ভালো।
গর্ভাবস্থায় ডাবের শাঁস খাওয়ার উপকারিতা কম বেশি আমাদের সকলের জানা। বিশেষ
করে গর্ভাবস্থায় এটি ভীষণভাবে উপকারী।
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে ডাব খাওয়ার পরেই ডাবের শাঁস ফেলে দেয়। কিন্তু জানলে
অবাক হবেন যে ডাবের শাঁস এর মধ্যেই রয়েছে সকল পুষ্টি উপাদান। যা আমাদের শরীর
পুষ্টির যোগান দিতে অনেক বেশি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। শরীরের সুস্বাস্থ্য
বজায় রাখতে এবং উজ্জ্বল ত্বকের জন্য ডাবের পানি উপকারিতা ব্যাপক।
এছাড়াও প্রচন্ড গরমের মধ্যে তৃষ্ণা মেটানোর জন্য ডাবের পানির জুরি মেলা ভার।
আমরা অনেকেই পানিটুকু খেয়ে ডাবের ভিতরে থাকা শাঁস ফেলে দেয়। কিন্তু আপনি
কি জানেন ডাবের শাঁস এর পুষ্টি গুনাগুন সম্পর্কে। যদি ডাবের শাঁসএর পুষ্টি
গুনাগুন সম্পর্কে জেনে থাকলে তাহলে ফেলে দিতেন না। গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি পান
করার পাশাপাশি ডাবের শাঁস এ রয়েছে বেশ উপকারিতা।
সকল পুষ্টির উৎস ডাবের শাঁসএ প্রচুর পরিমানে ভিটামিন, মিনারেলস এবং ফাইবার
থাকে। বিশেষ করে এতে থাকে ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং
ক্যালসিয়াম। যা শরীরের জন্য অত্যন্ত দরকারি। এই পুষ্টি উপাদান গর্ভবতী মায়ের
সুষম্ম খাদ্যাভাস বজায় রাখতে সাহায্য করে।
- পেটের স্বাস্থ্যঃ ডাবের শাঁসএ প্রাকৃতিক ফাইবার থাকার কারণে এটি পাচনতন্ত্রের জন্য ভালো। এছাড়াও এটি কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় একটি সাধারন সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় পেটের সমস্যা। ফাইবার পেটের ভেতরে ভালো ব্যাকটেরিয়া তৈরি করে যা পাচন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখে। পেটের গোলমাল গ্যাস বা অস্বস্তি থেকেও মুক্তি দিতে পারে।
- শরীর হাইড্রেটেড রাখেঃ ডাবের পরিপূরক গর্ভাবস্থায় শরীরে অতিরিক্ত পানি প্রয়োজন হয়। ডাবের শাঁসএ প্রচুর পানি থাকে যা শরীরকে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে। এটি মায়ের শরীরের সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে এবং শরীরে প্রয়োজনীয় তরল যোগ করতে সাহায্য করে। এটি গর্ভবতী মায়ের পেটের উপর চাপ কমাতে এবং শরীরের সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখতেও কার্যকরী।
- শক্তি ও এনার্জিঃ ডাবের শাঁসএ প্রাকৃতিক চিনির উপস্থিতি শক্তির জন্য উপকারী। এটি ত্বক হাড় এবং মাংসপেশি সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং গর্ভাবস্থায় মায়ের এনার্জি লেভেল বাড়িয়ে তোলে। গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরে অতিরিক্ত শক্তির প্রয়োজন হয়। আর ডাবের শাঁস এই শক্তির অভাব পূরণ করতে সাহায্য করে। এটি দ্রুত এবং দীর্ঘস্থায়ী শক্তি প্রদান করতে পারে যা মায়ের ক্লান্তি কমাতে সহায়ক।
- আন্টি ইনফ্লামেটরি গুণঃ গর্ভাবস্থায় ডাবের শাঁস খাওয়ার উপকারিতা মধ্যে অন্যতম একটি হলো এতে আন্টি ইনফ্লামেটরি গুণ রয়েছে। যা শরীরে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে গর্ভাবস্থায় কোন ধরনের ইনফেকশন বা প্রদাহের ঝুঁকি কমাতে এটি সহায়ক হতে পারে।
- গর্ভস্থ শিশুর স্নায়ু ও মস্তিষ্কের উন্নতিঃ ডাবের শাঁসএ থাকা পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম গর্ভস্থ শিশুর স্নায়ু এবং মস্তিষ্কের উন্নতি করতে সাহায্য করতে পারে এটি শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের গঠন এবং বিকাশের সহায়ক।
- প্রাকৃতিক এন্টিঅক্সিডেন্টঃ ডাবের শাঁসে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে। এটি মায়ের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী রাখতে সাহায্য করে যাতে মায়ের শরীর সহজেই রোগের বিরুদ্ধে লড়তে পারে।
গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি কতটা নিরাপদ
গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি কতটা নিরাপদ জানেন কি? গর্ভাবস্থায় মা ও সন্তানের
ভালো থাকা নিয়ে গর্ভবতী মায়েদের এবং পরিবারের সকলের দুশ্চিন্তার কোন শেষ থাকে
না। এই সময়ে গর্ভবতী নারীদের প্রতি বিশেষভাবে যত্নশীল হওয়া উচিত। কেননা
গর্ভবতী মায়ের যত্ন নিলেই একটি সুস্থ সুন্দর স্বাভাবিক বাচ্চা পৃথিবীতে আসবে।
এই জন্য গর্ভাবস্থায় মায়েদের অনেক বেশি পুষ্টিকর খাবার খেতে হয়। যাতে
করে তার গর্ভের শিশুর কষ্টের চাহিদা পূরণ হয়।
ডাবের পানিতে প্রচুর স্বাস্থ্য উপকারিতা ও পুষ্টি গুনাগুন রয়েছে
যা গর্ভাবস্থায় এবং গর্ভে থাকা শিশুর জন্য ভীষণ উপকারী। গর্ভকালীন সময়ে
নারীদের ডাবের পানি খেলে শারীরিক জটিলতা যেমন কমে ঠিক তেমনি ভাবে গর্ভে থাকা
শিশুটির মস্তিষ্ক সুস্থ ও ভালো রাখতে ডাবের পানি অত্যন্ত উপকারী বলে মনে করেন
চিকিৎসকরা।
গর্ভকালীন সময়ে ডাবের পানি পান করলে
গর্ভাবস্থায়
যে সমস্ত সমস্যা গুলি দেখা দেয় সেগুলো অনেকটাই হ্রাস করা সম্ভব। অনেক
স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ রয়েছে যারা গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার
উপকারিতাকে সমর্থন করে থাকেন। তবুও তারা গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার
বিষয়ে কিছু কিছু ভুল ধারণা পোষণ করেন। যেমন অনেকেই ভাবে যদি প্রতিদিন ডাবের
পানি পান করা হয় তাহলে গর্ভের শিশুর চুল ঘন হবে কিন্তু এর কোন বৈজ্ঞানিক
প্রমাণ নেই।
আবার অনেকে মনে করে ডাবের পানি গর্ভবতী মহিলার মধ্যে অম্লতার সৃষ্টি করে। এ
কথাটি একেবারে সঠিক নয় বললেই চলে। কেননা বর্ধমান পেট অম্লতার প্রধান কারণ
হিসেবে দাঁড়ায়। আর এর জন্য ভালো প্রতিকার হতে পারে শারীরিক ব্যায়াম। আপনি
যদি নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করেন তাহলে ভালো উপকারিতা পাবে।
তাই গর্ভাবস্থায় প্রত্যেকটা কার্যকারিতা ছোট এবং মাঝারি হওয়া
উচিত। কোন কিছুই অতিরিক্ত করা উচিত নয়।
গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি সাধারণত নিরাপদ তবে কিছু বিষয় মনে রাখা জরুরী। ডাবের
পানি প্রাকৃতিকভাবে হাইড্রেটিং, পুষ্টিকর এবং পেটের জন্য ভালো। এতে ক্যালোরি
কম, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মিনারেল
থাকে যা গর্ভবতী মায়ের এবং শিশুর জন্য উপকারী। তবে কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে-
- পানি বা ডাবের রাজত্বঃ গর্ভাবস্থায় তাজা ডাবের পানি পান করাই সবচেয়ে ভালো। বাজারে যে ডাবের পানি বিক্রি হয় তা অনেক সময় সংরক্ষিত বা প্রিজারভেটিভ যুক্ত থাকতে পারে যা গর্ভাবস্থায় বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। তাই যতটা সম্ভব তাজা এবং নিরাপদ উৎস থেকে ডাবের পানি পান করা উচিত।
- হাইজিনঃ ডাবের পানি পান করার সময় সতর্ক থাকতে হবে যেন তা দূষিত না হয়। কখনোই নোংরা বা অসাস্থ্যকর পরিবেশে ডাবের পানি পান করবেন না। গর্ভাবস্থায় আপনার ইমিউন সিস্টেম একটু দুর্বল থাকে তাই সুরক্ষিত পানি পান করা উচিত।
- বেশি পরিমাণে না পান করাঃ যদিও ডাবের পানি হালকা তবে বিভিন্ন সমস্যা বা পেট ফেঁপে যাওয়ার কারণ হতে পারে। সব কিছুতেই পরিমিত বজায় রাখা উচিত।
- শরীরের প্রতিক্রিয়াঃ কিছু গর্ভবতী নারী ডাবের পানি পান করলে গ্যাস বা পেটের অন্যান্য সমস্যা অনুভব করতে পারেন। যদি এমন কিছু সমস্যা হয় তবে ডাবের পানি পরিহার করা উচিত।
সুতরাং গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি উপকারী এবং নিরাপদ। তবে সতর্কতা অবলম্বন করে তা
যা পরিষ্কার এবং সঠিক পরিমাণে পান করা উচিত।
গর্ভাবস্থায় ডাবের শাঁস খাওয়া যাবে কি
গর্ভাবস্থায় ডাবের শাঁস খাওয়া যাবে কি। গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতার
পাশাপাশি গর্ভবস্থায় ডাবের শাঁস খাওয়ার উপকারিতা ও অনেক। গর্ভাবস্থায় মায়েদের জন্য একটি
অপরিহার্য পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার হলো ডাবের শাঁস। গর্ভবতী মা এবং বোনের স্বাস্থ্য
বজায় রাখতে ডাবের পানিকে সুপারফুড বলা হয়ে থাকে। তেমনিভাবে ডাবের শ্বাসেও
রয়েছে ব্যাপক উপকারিতা।
গর্ভাবস্থায় পরিমাণ মতো ডাবের শাঁস খাওয়া নিরাপদ এবং উপকারী। এটি পুষ্টিকর
সহজে হজমযোগ্য এবং শরীরের জন্য নানা উপকারী উপাদান সরবরাহ করে। ডাবের শাঁস
কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে, কেননা এটি ফাইবার সমৃদ্ধ। এছাড়াও এতে থাকা
ভিটামিন সি, বি-কমপ্লেক্স, ক্যালসিয়াম মা ও শিশুর জন্য উপকারী। ডাবের শাঁস
স্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকে।
এতে থাকা প্রাকৃতিক ফ্যাট গর্ভের শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়তা করে। ডাবের
শাঁস সহজে হজম যোগ্য প্রাকৃতিক শর্করা থাকায় শরীরে শক্তি যোগায়। তাই
গর্ভাবস্থায় পরিমাণ মতো ডাবের শাঁস খাওয়া নিরাপদ ও উপকারী। তবে
ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে পরিমিত মাত্রায় খাওয়া উচিত।
গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির অপকারিতা
গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির অপকারিতা কি? সবকিছুর উপকারিতার সাথে এর অপকারিতা ও
লক্ষ্য করা যায়। ইতিমধ্যে আমরা জেনেছি গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা
গুলো। সেজন্য যে এর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা অপকারিতা নেই সেটি ভাবা
একেবারেই ঠিক নয়। ডাবের পানি গর্ভাবস্থায় সাধারণত নিরাপদ ও উপকারী হলেও
অতিরিক্ত বা অনিয়ন্ত্রিতভাবে পান করলে কিছু সমস্যা হতে পারে। তাই গর্ভবতী
মায়েদের এটি গ্রহণের আগে কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরী।
- রক্তচাপ খুব কমিয়ে দিতে পারেঃ ডাবের পানিতে উচ্চমাত্রার পটাশিয়াম থাকে যা স্বাভাবিক অবস্থায় রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সহায়ক। তবে গর্ভবতী মায়ের যদি লো ব্লাড প্রেসার (হাইপোটেনশন) থাকে। তাহলে অতিরিক্ত ডাবের পানি পান করলে রক্তচাপ আরও কমে যেতে পারে যা মাথা ঘোরা, দুর্বলতা এবং অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।
- ব্লাড সুগার লেভেল বাড়াতে পারেঃ যদিও ডাবের পানিতে প্রাকৃতিক চিনি থাকে তবুও জেস্টেশানাল ডায়াবেটিযে(গর্ভকালীন ডায়াবেটিস) থাকলে এটি রক্তের শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে অতিরিক্ত পরিমাণে পান করলে ব্লাড সুগার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই গর্ভবতী মায়েদের ডায়াবেটিস থাকলে এটি পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।
- কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া হতে পারেঃ ডাবের পানি সাধারণত উপকারী হলেও কিছু মানুষের শরীরের সাথে মানিয়ে না গেলে কোষ্ঠকাঠিন্য এর মত সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিশেষ করে যদি বেশি পরিমাণে পান করা হয় তাহলে পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- এলার্জির ঝুঁকিঃ কিছু মানুষের নারকেল জাতীয় খাবারের প্রতি এলার্জি থাকতে পারে। গর্ভবতীর মায়ের যদি নারিকেল বা ডাবের পানির প্রতি এলার্জি থাকে তাহলে এটিকে চুলকানি, শ্বাসকষ্ট বা পেটে ব্যথা হতে পারে।
- অতিরিক্ত পানি ধারণের(ওয়াটার রিটেনশন) সমস্যাঃ যদি গর্ভবতী মায়ের কিডনির কোন সমস্যা থাকে তাহলে অতিরিক্ত ডাবের পানি পান করলে শরীরে অতিরিক্ত পানি জমে যেতে পারে। যা হাঁটুর ব্যথা বা শরীর ফুলে যাওয়ার কারণ হতে পারে।
- সংক্রমণের ঝুঁকেঃ যদি ডাবের পানি পরিষ্কার এবং স্বাস্থ্যকর পরিবেশ সংরক্ষণ না করা হয় তাহলে ব্যাকটেরিয়া বা অন্যান্য ভাইরাস ও ফাঙ্গাস দ্বারা তারা সংক্রমণ এর ঝুকি বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই সতর্কতা অবলম্বন করলে এই ধরনের সমস্যা আনানো সম্ভব।
পরিমিত পরিমানে ডাবের পানি গর্ভবতী মায়ের জন্য উপকারী। তবে অতিরিক্ত পান করলে
লো ব্লাড প্রেসার, রক্তের শর্করার ভারসাম্যহীনতা, কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া ও
সংক্রমণের ঝুকি বাড়াতে পারে। তাই ব্যক্তিগত শারীরিক অবস্থা বুঝে ডাক্তারের
পরামর্শ নিয়ে ডাবের পানি পান করা উচিত।
গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্নঃ গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খেলে কি ঠান্ডা লাগে?
উত্তরঃ গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি পান করলে
সাধারণত ঠান্ডা লাগে না। এটি প্রাকৃতিকভাবে হালকা বর্ষিত হওয়ার কারণে সংযত
পরিমাণে পান করলে কোন সমস্যা হয় না। তবে শরীরের প্রকৃতি ভেদে কারো কারো
ক্ষেত্রে ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা থাকে।
প্রশ্নঃ গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খেলে কি প্রেসার বাড়ে?
উত্তরঃ না, গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি সাধারণত
রক্তচাপ বাড়ায় না। বরং এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে। কারণ এতে
পটাশিয়াম ও ইলেকট্রোলাইট থাকে। তবে অতিরিক্ত পান করা বলে চিকিৎসকের পরামর্শ
নেওয়া ভালো।
প্রশ্নঃ গর্ভাবস্থায় নারিকেল খাওয়া যাবে কি?
উত্তরঃ গর্ভাবস্থায় নারিকেল খাওয়া যাবে
কি। হ্যাঁ গর্ভাবস্থায় নারিকেল খাওয়া যাবে। নারিকেল পুষ্টিকর এবং হজমে
সহায়ক। তবে পরিমাণ মতো খাওয়া উচিত।
প্রশ্নঃ ডাব খেলে কি বাচ্চা ফর্সা হয়?
উত্তরঃ না, ডাব খেলে বাচ্চা ফর্সা হয় না। শিশুর গায়ের রঙ জিনগত কারণে
নির্ধারিত হয়। খাদ্য এর পরিবর্তন করতে পারে না। তবে ডাবের পানি ত্বকের আর্দ্রতা
বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং এতে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট ত্বক সুস্থ ও উজ্জ্বল
রাখতে সহায়ক।
প্রশ্নঃ ত্বক ফর্সা করতে ডাবের পানির কার্যকারিতা?
উত্তরঃ ডাবের পানি ত্বক হাইড্রেটেড এবং
স্বাস্থ্যকর রাখতে সাহায্য করে। তবে এটি ত্বক ফর্সা করার সরাসরি উপায় নয়। এতে
থাকা এনটিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সহায়ক হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমার নিজস্ব অভিমত
আজকের আর্টিকেলে ডাবের পানির পুষ্টিগুণ সম্পর্কে অজানা কিছু তথ্য, গর্ভাবস্থায়
ডাবের পানির উপকারিতা, গর্ভাবস্থায় কি পরিমান ডাবের পানি পান করা উচিত, ডাবের
পানি সংরক্ষণের সেরা উপায়, গর্ভাবস্থায় ডাবের শাঁস খাওয়ার উপকারিতা,
গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি কতটা নিরাপদ, গর্ভাবস্থায় ডাবের শাঁস খাওয়া যাবে কি,
গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির অপকারিতা, গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা ও
অপকারিতা সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন উত্তর, গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা ও
অপকারিতা সম্পর্কে আমার নিজস্ব অভিমত সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
দেবার চেষ্টা করেছি
যেকোনো কিছু থেকেই প্রাকৃতিকভাবে যদি উপকার পেতে চান তাহলে তা দীর্ঘদিন খেতে
হয় অথবা ব্যবহার করতে হয়। হঠাৎ করে একদিনে বা দুইদিনে ব্যবহার করে ভালো উপকার
পাওয়া খুব কমই সম্ভব। তাই আপনি যদি ডাবের পানি পান করে উপকার পেতে চান তাহলে
নিয়মিত পান করতে হবে। তবে খুব বেশি পরিমাণে পান করবেন না। নিয়মিত এবং পরিমাণ
মত ডাবের পানি পান করলে তবেই উপকারিতা পাবেন বলে আশা করছি।
মাল্টিম্যাক্স আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।
comment url