পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে জানুন এই ১০টি গুরুত্বপূর্ণ টিপস!
পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে করণীয় কি? বর্তমান সময়ে হয়তো অনেকেই বিভিন্ন
প্রয়োজনে নতুন ল্যাপটপ কেনার পরিবর্তে পুরনো ল্যাপটপ ক্রয় করার চিন্তাভাবনা
করছেন। যদি আপনি সেই ব্যক্তি হন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য।
পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে যা জানতে হবে, সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে গাইডলাইন জানুন এবং
সেরা দামে একটি ভালো মানের পুরনো ল্যাপটপ কেনার পরামর্শ থাকবে আজকের আর্টিকেলে।
এছাড়াও পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে করণীয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস নিয়ে আলোচনা
করব।
পোস্ট সূচিপত্রঃ পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে করণীয়
- পুরাতন ল্যাপটপ কেনার উপকারিতা
- পুরনো ল্যাপটপ কেনার আগে যে সকল বিষয়ে জানা জরুরী
- ওয়ারেন্টি পলিসি সার্ভিস সম্পর্কে জানুন
- পুরনো ল্যাপটপের কেনার অপকারিতা
- পুরনো ল্যাপটপ কি কেনা উচিত
- পুরনো ল্যাপটপ কারা কিনবেন কারা কিনবেন না
- পুরাতন ল্যাপটপ কোথায় থেকে কিনবেন
- পুরনো ল্যাপটপের আনুমানিক দাম
- পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে করনীয় সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন উত্তর
- পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে করণীয় সম্পর্কে আমার নিজস্ব অভিমত
পুরাতন ল্যাপটপ কেনার উপকারিতা
পুরাতন ল্যাপটপ কেনার বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে। যা বিশেষ করে বাজেট সচেতন এবং
নির্দিষ্ট প্রয়োজনের জন্য কেনাকাটা করা ব্যক্তিদের জন্য উপকারী হতে পারে। পুরাতন
ল্যাপটপ কেনার সময় সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করা হলে আপনার জন্য এটি একটি স্মার্ট
এবং সাশ্রয়ী সিদ্ধান্ত ।পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে করণীয় দিকগুলো জানানোর পূর্বে
প্রথমত জানা দরকার পুরাতন ল্যাপটপ কেনার উপকারিতা গুলো কি কি-
- মূল্য সাশ্রয়ঃ নতুন ল্যাপটপের তুলনায় পুরাতন ল্যাপটপ অনেক কম দামে পাওয়া যায় আপনার যদি বাজেট সীমিত থাকে তাহলে একটি উচ্চমানের ল্যাপটপ কম খরচে কেনা সম্ভব হবে যা আপনার মূল্য সাশ্রয় করতে সাহায্য করবে।
- মডিফিকেশন এর সুযোগঃ পুরাতন ল্যাপটপে RAM বাড়ানো SSD যোগ করা বা প্রসেসর আপডেট করার মাধ্যমে কার্যক্ষমতা উন্নত করা যায়। অনেক কম খরচে কাস্টোমাইজড ল্যাপটপ তৈরি করা সম্ভব।
- পরিবেশ সুরক্ষাঃ পুরাতন ডিভাইস পুনরায় ব্যবহার করার ফলে ইলেকট্রনিক বর্জ্য কমবে এটি একটি পরিবেশবান্ধব পন্থা।
- অপশন বেশি পাওয়া যায়ঃ পুরাতন মডেল থেকে পছন্দমতো স্পেসিফিকেশন বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকে। নির্দিষ্ট মডেল বা ব্র্যান্ড যেগুলো নতুন পাওয়া যায় না সেগুলো পুরাতন মার্কেটে পাওয়া যায়।
- পরীক্ষিত পারফরম্যান্সঃ পুরাতন ল্যাপটপ ব্যবহারকারীদের রিভিউ এবং অভিজ্ঞতা জানা সম্ভব হয়। ফলে কোন ডিভাইসের দীর্ঘমেয়াদি পারফরম্যান্স সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়।
- অল্প খরচে শিক্ষার জন্য উপযুক্তঃ যারা কেবল সাধারণ কাজ (যেমন ব্রাউজিং, লেখালেখি বা অনলাইন ক্লাস ) ইত্যাদি করেন তাদের জন্য পুরাতন ল্যাপটপই যথেষ্ট। শিক্ষার্থী বা স্টার্টআপ ব্যবসার জন্য এটি একটি কস্ট ইফেকটিভ অপশন।
- স্বল্প মেয়াদী প্রয়োজন মেটানোঃ স্বল্প মেয়াদী প্রজেক্ট বা ভ্রমণের সময় সস্তায় একটি ল্যাপটপ ব্যবহার করতে চাইলে পুরনো ল্যাপটপ একটি ভালো সমাধান হতে পারে আপনার জন্য।
পুরনো ল্যাপটপ কেনার আগে যে সকল বিষয়ে জানা জরুরী
পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে করণীয় কি। পুরাতন ল্যাপটপের দাম যদিও কম এবং মূল্য
সাশ্রয়ী হলেও সকল যন্ত্রাংশ সঠিকভাবে কাজ নাও করতে পারে। অনেক সময় দেখা যায়
পুরাতন ল্যাপটপ কেনার পরবর্তী সেবা অর্থাৎ কখনো কখনো বিক্রয়ত্তর সেবা নাও মিলতে
পারে। পুরাতন ল্যাপটপ কিনে তো নেন কিন্তু না বুঝে কেনার ফলে পরবর্তীতে অনেক বেশি
সমস্যায় পড়েন।
আপাত দৃষ্টিতে আপনি যদি ল্যাপটপের বাহ্যিক দিক দেখেই পুরাতন ল্যাপটপ ক্রয় করেন।
তাহলে এ সকল সমস্যাই পড়তে পারেন। কেননা একটি পুরাতন ল্যাপটপ যেভাবে ডেকোরেশন করা
থাকে তা দেখে কোনভাবেই বোঝার উপায় থাকে না যে ল্যাপটপটি কতদিনের পুরনো। আপনি যদি
একজন অনভিজ্ঞ ক্রেতা হয়ে থাকেন তাহলে অনেক বেশি দুর্ভোগের শিকার হতে
পারেন।
এইজন্য পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে করণীয় দিকগুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে
তারপর ল্যাপটপ ক্রয় করা জরুরী-
ল্যাপটপের বাহ্যিক অবস্থা পরীক্ষা করুন
- ডিসপ্লেঃ স্ক্রিনে কোন দাগ স্ক্র্যাচ বা ডেট পিক্সেল আছে কিনা তা পরীক্ষা করে নিন। যদি থাকে তাহলে এই ধরনের ল্যাপটপ এড়িয়ে চলুন কেননা এ সকল দাগ স্ক্র্যাচ ডেড পিক্সেল দিনে দিনে বৃদ্ধি পায় অর্থাৎ একটি দাগ থেকে অনেকগুলো দাগের সৃষ্টি করতে পারে। এজন্য ভালোমতো দেখে নিন।
- বডিঃ ল্যাপটপের চেসিস বা ক্যাসিনে ফাটল বা বড় কোন ক্ষতি আছে কিনা তা যাচাই করুন।
- কিবোর্ড ও ট্রাক প্যাডঃ পুরাতন ল্যাপটপ ক্রয় করার পূর্বে আরও একটি বিষয় ভালোভাবে নজর দেওয়া জরুরি সেটি হচ্ছে কীবোর্ড ও ট্র্যাকপ্যাড। ট্রাক প্যাড সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা সঠিক প্রতিক্রিয়া দিচ্ছে কিনা তা খেয়াল করুন। এবং রেসপন্সিভ কিনা তা যাচাই করুন। ল্যাপটপে স্ক্রিনে ক্লিক করে দেখুন যে কারশর ঠিকমতো মুভমেন্ট করছে কিনা। এছাড়াও প্রতিটি কি ঠিকমতো কাজ করছে কিনা তা দেখুন। এ ধরনের ল্যাপটপগুলোতে এক বা একাধিক কি নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- ইউএসবি এবং কানেক্টরঃ ইউএসবি, হেডফোন জ্যাক, এইচডিএমআই চার্জিং পোর্ট ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা তা যাচাই করুন।
হার্ডওয়্যার যাচাই করুন
- প্রসেসরঃ আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী প্রসেসরের গতি ও ক্ষমতা যাচাই করুন ( যেমন intel core i5, i6 amd রাইজেন )
- Ramঃ সাধারণ কাজের জন্য 4Gb থেকে 8Gb যথেষ্ট। তবে উচ্চমানের কাজের জন্য ১৬gb Ram প্রয়োজন হতে পারে।
- স্টোরেজঃ পুরাতন ল্যাপটপ কেনার পূর্বে ল্যাপটপটিতে কতটুকু স্টোরেজ রয়েছে তা জানাও জরুরী একটি বিষয়। ল্যাপটপের হার্ডড্রাইভ কি অবস্থায় রয়েছে তার স্বাস্থ্য কতটুকু ভালো আছে কোন রকম ব্যাড সেক্টর রয়েছে কিনা তা ভালোমতো দেখে নিন। এসএসডি থাকলে পারফরম্যান্স ভালো হবে এইচডিডি থাকলে তার অবস্থা পরীক্ষা করে কিনুন।
- গ্রাফিক্স কার্ডঃ গেমিং ভিডিও এডিটিং কাজের জন্য ডেডিকেটেড গ্রাফিক্স কার্ড প্রয়োজন কিনা তা নিশ্চিত হয়ে নিন।
ব্যাটারির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুনঃ ব্যাটারি চার্জ কতক্ষণ ধরে রাখে
তা ভালোভাবে যাচাই করুন। ব্যাটারি রিপ্লেসমেন্ট সহজে পাওয়া যাবে কিনা তা নিশ্চিত
করুন। যদি সম্ভব হয় ব্যাটারি স্বাস্থ্য চেক করতে সফটওয়্যার ব্যবহার করুন
(ব্যাটারী Infoview) ল্যাপটপের সাথে যে এডাপটার টা দিবে সেটা ল্যাপটপে সাথে
কানেক্ট করে নিন। তারপর চার্জ স্লো নাকি নরমাল হচ্ছে অর্থাৎ পরীক্ষা করুন যে
ঠিকমতো চার্জ নিচ্ছে কিনা।
সফটওয়্যার এবং অপারেটিং সিস্টেম যাচাই করুনঃ অপারেটিং সিস্টেমের লাইসেন্স
বৈধ কিনা তা যাচাই করে নিন। সিস্টেমে কোন ম্যালওয়্যার ভাইরাস আছে কিনা সেটাও
নিশ্চিত করতে এন্টিভাইরাস স্ক্যান করুন। প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ইন্সটল করা যাবে
কিনা তা যাচাই করুন।
তাপ এবং কুলিং সিস্টেম পরীক্ষা করুনঃ ল্যাপটপ অতিরিক্ত গরম হচ্ছে কিনা এবং
ফ্যান ঠিকমতো কাজ করছে কিনা তা যাচাই করুন। তাপের কারণে পারফরমেন্সে কোন সমস্যা
দেখা দেয় কিনা তাও নিশ্চিত করে অতঃপর ক্রয় করুন।
ওয়ারেন্টি এবং সার্ভিস হিস্টোরি যাচাইঃ ওয়ারেন্টি এখনো বৈধ কিনা তা
জানুন এবং ল্যাপটপের সার্ভিসিং বা রিপেয়ারের কোন রেকর্ড থাকলে সেটাও পরীক্ষা
করুন। বিক্রেতার কাজ থেকে সার্ভিসিং বা মেরামতের নিশ্চিতকরণ নিন।
বিক্রেতার রিভিউ এবং বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করুনঃ যদি অনলাইন প্লাটফর্ম
থেকে পুরাতন ল্যাপটপ ক্রয় করেন তাহলে রেটিং এবং রিভিউ দেখুন। কোন ফিজিকাল স্টোর
থেকে কেনার সময় দোকানের পরিচিত এবং বাজারে তাদের খ্যাতি যাচাই করে তারপর ক্রয়
করতে আগ্রহী হন।
মূল্য এবং দরদাম করুনঃ পুরাতন ল্যাপটপের বাজার মূল্য সম্পর্কে পূর্বেই
ধারণা নিন। নতুন ল্যাপটপের দামের সাথে তুলনা করে দেখুন। বিক্রেতার কাজ থেকে মূল্য
জেনে দরদাম করুন। কাস্টমাইজেশন এবং আপগ্রেড এর সম্ভাবনা যাচাই করুন। ল্যাপটপের
র্যাম এসএসডি বা অন্যান্য অংশ আপডেট করা যাবে কিনা এছাড়াও আপনার প্রয়োজন
অনুযায়ী এটি কাস্টমাইজ করে নেয়া সম্ভব কিনা তা নিশ্চিত হয়ে নিন।
সরাসরি পরীক্ষা করে দেখুনঃ সরাসরি পরীক্ষা করে দেখার জন্য ল্যাপটপ চালু
করে বুটিং টাইম এবং অপারেশন স্পিড পরীক্ষা করুন। ইন্টারনেট ব্রাউজিং ভিডিও প্লে
করা এবং অন্যান্য দৈনন্দিন কাজ ঠিকভাবে হচ্ছে কিনা তা যাচাই করুন।
রশিদ বা ক্রয় প্রমাণ পত্র নিনঃ আপনি যে পুরাতন ল্যাপটপটি তার কাছ
থেকে ক্রয় করেছেন তার প্রমাণ পত্র নিন। এতে ল্যাপটপের দাম মডেল এবং বিক্রেতা
তথ্য উল্লেখ থাকে।
পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে করণীয় এ সকল গুরুত্বপূর্ণ দিক গুলো বিবেচনা করা প্রয়োজন এতে
করে আপনি একটি কার্যকর এবং টেকসই ডিভাইস পাবেন। আপনি সহজে একটি কার্যকর এবং
মানসম্মত পুরাতন ল্যাপটপ ক্রয় করতে পারবেন।
ওয়ারেন্টি পলিসি সার্ভিস সম্পর্কে জানুন
ওয়ারেন্টি পলিসি সার্ভিস সম্পর্কে ভালোমতো ধারণা নিয়া জরুরী একটি বিষয়। আপনি
যখনই এই সমস্ত প্রোডাক্টগুলো কিনবেন তখন ওয়ারেন্টি পলিসি সম্পর্কে ভালোমতো ধারণা
নিবেন। ল্যাপটপ কেনার সময় কোম্পানি একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ওয়ারেন্টি দিবে।
যদি আপনি একটি নতুন ল্যাপটপ কিনেন তাহলে সাধারণত 1 থেকে 3 বছরের মধ্যে ওয়ারেন্টি
সার্ভিস পাবেন এবং পুরাতন ল্যাপটপ এর ক্ষেত্রে ল্যাপটপ কেনার সময় ওয়ারেন্টি
স্ট্যাটাস চেক করে নিন।
অনলাইনে সিরিয়াল নম্বর ব্যবহার করে এটি যাচাই করা যায়। পুরাতন ল্যাপটপের
ওয়ারেন্টি সাধারণত এক্সপায়ার হয়ে যায় কিন্তু নির্দিষ্ট সার্ভিস সেন্টারে
গিয়ে ফি দিয়ে মেরামত করানো যাবে। কিছু থার্ড পার্টি কোম্পানি পুরাতন ল্যাপটপের
জন্য রিনিউট ওয়ারেন্টি অফার করে। বাংলাদেশের মধ্যে সাধারণত যতগুলো সোর্স থেকে এই
ল্যাপটপগুলো আসে অর্থাৎ যতগুলো চক্র সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এই ল্যাপটপগুলো দোকানে
সেল করা হয় তাদের প্রত্যেকেরই ওয়ারেন্টি পলিসি প্রায় একই রকম থাকে।
এজন্য ল্যাপটপ কেনার সময় ওয়ারেন্টি নিয়ে স্পষ্ট ধারণা নিয়ে থার্ড পার্টি
সার্ভিস সেন্টার থেকে ওয়ারেন্টি দাবি করার আগে ব্র্যান্ড অথোরাইজড কিনা তা
ভালোভাবে নিশ্চিত করুন। সাধারণত সার্ভিস ওয়ারেন্টি বা মেইন ফ্যাকচারার
ওয়ারেন্টি মেয়াদ শেষে টাকা খরচ করেই সমস্যা সমাধান করতে হয়। তবে ল্যাপটপ কেনার
সময় ওয়ারেন্টি কভারেজ বুঝে নেওয়া এবং সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করলে ভবিষ্যতে
ঝামেলা এড়ানো সম্ভব।
পুরনো ল্যাপটপের কেনার অপকারিতা
পুরনো ল্যাপটপের কেনার অপকারিতা এবং কিছু ঝুঁকি রয়েছে। সকল জিনিসেরই যেমন
উপকারিতা রয়েছে তেমনি এর কিছু অপকারিতাও থাকে। যেমন-
- আয়ুষ্কাল কমে যায়ঃ ল্যাপটপের হার্ডওয়ার যখন পুরনো হবে তখন দ্রুত খারাপ হতে পারে এতে করে আপনার কাজ করতে বেশ অসুবিধার সৃষ্টি করবে।
- ব্যাটারি ইস্যু ইস্যুঃ পুরাতন ল্যাপটপের ব্যাটারির ক্ষমতা সাধারণত কমে যায় ফলে বারবার চার্জ দিতে হয় বা ব্যাটারি বদলাতে হয়।
- স্পেয়ার স্পোর্টসঃ পুরাতন মডেলের জন্য পার্টস পাওয়া কঠিন হতে পারে।
- ওয়ারেন্টি ও সাপোর্টঃ বেশিরভাগ পুরাতন ল্যাপটপের মেইন ফ্যাকচারার ওয়ারেন্টি শেষ হয়ে যায়। ওয়ারেন্টি না থাকলে যেকোন মেরামতের জন্য বাড়তি খরচ বহন করতে হয়।
- সফটওয়্যার আপডেটঃ পুরাতন ল্যাপটপগুলো নতুন অপারেটিং সিস্টেম বা সফটওয়্যার সাপোর্ট নাও করতে পারে। নতুন অ্যাপ্লিকেশন বা প্রোগ্রাম চালানোর সময় ল্যাপটপ ধীরগতিতে কাজ করবে।
- পোর্ট এবং কানেক্টিভিটিঃ পুরাতন ল্যাপটপে USB-C নতুন ওয়াইফাই স্ট্যান্ডার সাপোর্ট নাও থাকতে পারে।
- তাপমাত্রার সমস্যার ঝুঁকিঃ দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহারের ফলে প্রসেসর ও সিপিইউ এর কুলিং সিস্টেম দুর্বল হয়ে যেতে পারে। তাপ বেশি উৎপন্ন হলে ল্যাপটপ হ্যাং বা বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে
- ফিজিক্যাল ড্যামেজঃ স্ক্র্যাচ, ডিসপ্লে ড্যামেজ বা কিবোর্ড এর সমস্যা থাকতে পারে এই ধরনের ক্ষতি চেক না করলে পরবর্তীতে ঝামেলা হতে পারে।
- ডাটা সিকিউরিটি ঝুঁকিঃ পুরাতন ল্যাপটপে আগে ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত ডেটা থাকতে পারে যা মেলওয়ার বা ভাইরাস দিয়ে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পুরনো হার্ড ড্রাইভে ডেটা চুরি বা ডেটা লিকের ঝুঁকি বেশি পাওয়া যায়।
- গোপন সমস্যাঃ পুরাতন ডিভাইসে হিডেন অনেক ধরনের সমস্যা থাকতে পারে যা কেনার সময় ধরা পড়ে না। বিক্রেতা সমস্যা লুকিয়ে রাখে এবং কম সময়ের জন্য কাজ করার মত অবস্থায় বিক্রি করতে পারে। এজন্য যথাসম্ভব বিশ্বস্ত বিক্রেতার কাছ থেকে কেনার চেষ্টা করুন।
পুরনো ল্যাপটপ কি কেনা উচিত
পুরনো ল্যাপটপ কি কেনা উচিত? নতুন একটি ভালো মানের ল্যাপটপ এর দাম তুলনামূলকভাবে
অনেক বেশি হয়ে থাকে। আর্থিক সংকটের কারণে অনেকের পক্ষেই নতুন ল্যাপটপ কেনা সম্ভব
হয় না ফলে বাধ্য হয়ে পুরাতন ল্যাপটপ কিনতে হয়। এক সময় ল্যাপটপ ছিল বিলাসিতার
পণ্য। কিন্তু ল্যাপটপ এখন দৈনন্দিন ব্যবহারযোগ্য একটি ডিভাইস।
সহজে বহন করার সুবিধা উন্নত প্রযুক্তি এবং নানা ধরনের ফিচারের কারণে ল্যাপটপ এখন
সকলের কাছেই ভীষণ জনপ্রিয়। সেজন্য আপনি যদি একটি ভালো মানের ল্যাপটপ কেনার
পরিকল্পনা করেন তাহলে আপনাকে গুনতে হতে পারে প্রায় ৩০০০০ টাকা। অনেকের পক্ষেই এত
দামে ল্যাপটপ কেনা সম্ভব হয় না তখন পুরাতন ল্যাপটপেই একমাত্র ভরসা হয়ে
ওঠে।
পুরাতন ল্যাপটপ কেনা উচিত কিনা তা নির্ভর করে আপনার প্রয়োজন বাজেট এবং ডিভাইসের
অবস্থা সম্পর্কে জানার উপর। এটি কখনো কখনো আপনার জন্য ভালো বিকল্প হতে পারে তবে
পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে করনীয় দিকগুলো সম্পর্কে জেনে তারপর ক্রয় করবেন। যদি
আপনি ঠিকঠাক যাচাই করতে পারেন এবং সীমিত ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত একটি ডিভাইস পান
তাহলে পুরনো ল্যাপটপ একটি ভালো অপশন হতে পারে আপনার জন্য। তবে দীর্ঘ মেয়াদী
বিনিয়োগের জন্য নতুন ল্যাপটপ কেনাই শ্রেয়।
পুরনো ল্যাপটপ কারা কিনবেন কারা কিনবেন না
বর্তমান যুগ ডিজিটালাইজেশন। ফলে ল্যাপটপ কম্পিউটারের চাহিদা দিন দিন বহু গুনে
বেড়ে চলেছে। পড়াশোনা থেকে শুরু করে ব্যবসা-বাণিজ্য সর্বক্ষেত্রেই এটি একটি মূল
হাতিয়ার। তবে বর্তমানে কয়েক গুণে ল্যাপটপের চাহিদা বেড়েছে যা সকল মধ্যবিত্ত
পরিবারের মানুষের কাছে হাতের নাগালের বাইরে। তাই পুরাতন ল্যাপটপ ক্রয় করার সময়
অনেকেই বিরম্বনার শিকার হন এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠতে পারেন না বা বুঝতে
পারেন না পুরনো ল্যাপটপ কারা কিনবেন কারা কিনবেন না।
কাদের জন্য
পুরাতন ল্যাপটপ মূলত তাদের জন্য উপযুক্ত যারা হালকা কাজের জন্য ল্যাপটপ ব্যবহার
করবেন বলে ভাবছেন এবং সীমিত বাজেটের মধ্যে একটি কার্যকর সমাধান খুঁজছেন। পুরাতন
ল্যাপটপ তাদের জন্য উপযুক্ত যাদের নির্দিষ্ট কাজের জন্য উচ্চ পারফরমেন্সের
প্রয়োজন নেই এবং যারা কম বাজেটে কার্যকর সমাধান চান তবে কেনার আগে ল্যাপটপের
বর্তমান অবস্থা ভালোভাবে যাচাই করা জরুরী।
শিক্ষার্থীরাঃ যারা পড়াশোনার জন্য ল্যাপটপ ব্যবহার করেন যেমন ইন্টারনেট
ব্রাউজিং, ই-বুক পড়া, অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি, অনলাইন ক্লাস বা মিটিং ইত্যাদি।
শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন ল্যাপটপ কিনা অনেক সময় ব্যয়বহুল হতে পারে তাই পুরনো
ল্যাপটপ সাশ্রয়ী বিকল্প।
ফ্রিল্যান্সাররাঃ যারা মূলত নতুন ফ্রিল্যান্সিং শুরু করছেন এবং কম বাজেটে
ডিভাইসে কাজ চালাতে চান যেমন রাইটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন এর বেশি কাজ তাদের জন্য
পুরাতন ল্যাপটপ উপযুক্ত হবে।
অফিস বা ব্যবসার মালিকঃ যে সব ছোট ব্যবসার মালিক হালকা কাজের জন্য ল্যাপটপ
ব্যবহার করেন যেমন ইমেইল, ইনভেন্টরি, ট্র্যাকিং ইনভয়েস তৈরি ইত্যাদি সকল কাজের
জন্য পুরাতন ল্যাপটপ একটি সাশ্রয়ী বিকল্প হতে পারে।
সাধারণ ব্যবহারকারীঃ যারা ল্যাপটপ কেবল সাধারণ কাজের জন্য ব্যবহার করতে
চাইছেন যেমন ভিডিও দেখা, ইমেইল চেক করা, সোশ্যাল মিডিয়া ব্রাউজিং ইত্যাদি।
ছোট বাচ্চাদের জন্যঃ যেসব বাবা-মারা তাদের সন্তানদের অনলাইনে শিক্ষা দিতে
চান তারা সাশ্রয়ী মূল্যে পুরাতন ল্যাপটপ ক্রয় করতে পারেন। এটি সাধারণত শিশুদের
অনলাইন লার্নিং বা সাধারণ শিক্ষার জন্য উপযুক্ত হবে।
বিশেষ প্রজেক্ট বার ট্রায়ালের জন্যঃ যেসব ব্যবহারকারী ল্যাপটপে বিশেষ কাজ
বা প্রজেক্ট ( যেমন লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম ইনস্টল করা) ট্রাই করতে চান এবং
পুরনো ল্যাপটপে এক্সপেরিমেন্ট করলে মূল ডিভাইস ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি কম
থাকবে।
কাদের জন্য না
পুরাতন ল্যাপটপ সাধারণত তাদের জন্য উপযুক্ত নয় যাদের খুব উচ্চমানের বা দ্রুত
পারফরমেন্স এর প্রয়োজন। এছাড়াও যারা দীর্ঘ সময় ধরে ডিভাইস চলতে সক্ষম এবং
আধুনিক প্রযুক্তি সমর্থিত ডিভাইস চান তাদের জন্য পুরাতন ল্যাপটপ উপযুক্ত নাও হতে
পারে।
গেমাররাঃ গেমিং এর জন্য শক্তিশালী গ্রাফিক, উচ্চতর প্রসেস প্রসেসর
রেট এবং দ্রুত প্রসেসিং পাওয়ার প্রয়োজন হয়। পুরাতন ল্যাপটপে সাধারণত আধুনিক
গেমিং এর জন্য প্রয়োজনীয় গ্রাফিক্স কার্ড বা হাই এন্ড প্রসেসর নেই ফলে গেমিং এর
অভিজ্ঞতা সন্তোষজনক হবে না।
গ্রাফিক্স ডিজাইনার ও ভিডিও এডিটররাঃ ভিডিও এডিটিং, থ্রিডি, মডেলিং বা
গ্রাফিক্স ডিজাইনিং এর মত ভারী কাজের জন্য অত্যন্ত শক্তিশালী হার্ডওয়্যার
প্রয়োজন। যেমন একটি শক্তিশালী প্রসেসর, উচ্চমানের গ্রাফিক্স কার্ড এবং বেশি RAM
। পুরাতন ল্যাপটপে এই ধরনের কাজের জন্য পর্যাপ্ত ক্ষমতা থাকবে না
প্রফেশনাল সফটওয়্যার ব্যবহারকারীঃ সফটওয়্যার CAD ম্যাটল্যাব বা অন্যান্য
পায়েল এবং ইঞ্জিনিয়ারিং স্টাফ হেয়ার ব্যবহার করেন। এসব সফটওয়্যার চালানোর
জন্য উন্নত প্রসেসর, উচ্চ র্যাম, এবং শক্তিশালী স্টোরেজ প্রয়োজন যা পুরাতন
ল্যাপটপে থাকে না।
দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি লাইফ প্রয়োজন যাবেঃ পুরাতন ল্যাপটপে ব্যাটারি
দক্ষতা কম হতে পারে আপনারা যারা পুরো দিন ধরে ব্যাটারি চালাতে চান তাদের এটি জন্য
উপযুক্ত নয়।
নতুন প্রযুক্তির সমর্থন প্রয়োজনঃ USB-C port, 4K Display , WiFi 6
সমর্থন। পুরাতন ল্যাপটপে নতুন প্রযুক্তির সুবিধা পাওয়া যাবে না পুরাতন ল্যাপটপ
কেনার সময় আপনি যে কাজগুলো করতে চান তা সঠিকভাবে চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
পুরাতন ল্যাপটপ কোথায় থেকে কিনবেন
পুরাতন ল্যাপটপ কোথায় থেকে কিনা যাই তা আমরা অনেকেই জানিনা। পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে যা জানতে হবে তা সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যে আলোচনা করেছি। তবে পুরাতন ল্যাপটপ
কেনার জন্য বেশ কিছু বিকল্প রয়েছে। তবে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে যেন আপনি
একটি ভাল এবং নির্ভরযোগ্য ল্যাপটপ কিনতে পারেন এখানে কয়েকটি জায়গা ও পরামর্শ
দেয়া হলো-
অনলাইন মার্কেটপ্লেস-
- আমাজনঃ এখানে বিভিন্ন রকমের রিফার্বিশড এবং সেকেন্ডহ্যান্ড ল্যাপটপ পাওয়া যায়। বিশ্বাসযোগ্য সাইট থেকে ক্রয় করুন যাতে আপনি গ্যারান্টি বা রিটার্ন পলিসি পান।
- ক্রেগলিস্ট বা OLXঃ যদি আপনি স্থানীয়ভাবে ল্যাপটপ নিতে চান তবে এই ধরনের সাইট ব্যবহার করতে পারেন তবে এর জন্য সেলারের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে যাচাই করা জরুরী।
- রিফারবেস্ট ল্যাপটপ সপঃ অনেক সময় কিছু প্রতিষ্ঠান রিফার্বিশড শপ ল্যাপটপ বিক্রি করে। এটি পুরাতন ল্যাপটপ যা পুনরায় মেরামত বা আপগ্রেড করা হয়েছে এই ল্যাপটপগুলি সাধারণত ভালো মানের এবং কিছু গ্যারান্টি সহ আসে। কিছু পরিচিত সাইট: Refurbished laptops ( RefurbishedLaptopStore.com, BackMarket.com)
স্থানীয় ইলেকট্রনিক্স দোকানঃ অনেক স্থানীয় দোকানে পুরাতন ল্যাপটপ বিক্রি
হয়। আপনি দোকানে গিয়ে দেখে কিনতে পারেন এবং চাইলে কিছু ক্ষেত্রে মেরামত বা
আপডেট করতে পারে্ন। তবে পরীক্ষা করার জন্য কিছু সময় দিতে হবে।
ইন্টিগ্রেটেড রিসেলার বা সার্ভিস প্রোভাইডারঃ কিছু সংস্থা যেমন Dell
Outlet, lenovo Outlet এবং HP refurbished Store পুরাতন বা রিফার্বিশড ল্যাপটপ
বিক্রি করে। আপনার প্রয়োজন হলে তাদের কাছ থেকেও চিনতে পারেন।
পুরাতন ল্যাপটপের আনুমানিক দাম
পুরনো ল্যাপটপের আনুমানিক দাম কেমন তা আমরা অনেকেই জানতে চাই। পুরাতন
সেকেন্ডহ্যান্ড ল্যাপটপের দাম অনেক ধরনের ফ্যাক্টরের ওপর নির্ভর করে- যেমন
ল্যাপটপের ব্র্যান্ড, মডেল, কন্ডিশন, বয়স এবং তার স্পেসিফিকেশন। সাধারণত পুরাতন
ল্যাপটপের দাম নতুন ল্যাপটপের তুলনায় অনেক কম হয়। তবে সেই মূল্য
সাশ্রয় নির্ভর করে কিছু বিশেষ বিষয়ের ওপর যা নিচে বিশ্লেষণ করা হলো-
ব্র্যান্ড
- Apple: Appleম্য়াকবুকগুলি দেশ দামি। এমনকি পুরাতন হলে। একটি পুরাতন MAckbook Air, Mackbook Pro ( ২০১৬-২০১৮ এর মধ্যে ) এর দাম প্রায় ৩০০০০ থেকে ৫০০০০ টাকার মধ্যে হতে পারে। তবে ৫ বছর বা তার বেশি পুরাতন মডেল একটু কম দামি হতে পারে(২০০০০-৩০০০০ টাকা)।
- Dell, Hp, Lenovo: এই ব্র্যান্ডগুলো ল্যাপটপের দাম একটু কম হয়। Dell বা lenovo এর পুরাতন ল্যাপটপ ( ইন্টেল কোর i5, i7 এর মডেল) ১৫০০০ থেকে ৩০০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। এই দামটাও স্পেসিফিকেশন ও কন্ডিশনের উপর নির্ভর করে।
মডেল ও স্পেসিফিকেশন
- কোর i3ঃ যদি এটি ৫ থেকে ৭ বছরের পুরাতন হয় তবে এর দাম ১০০০০ থেকে ১৫০০০ টাকার মধ্যে হতে পারে।
- কোর i5ঃ এই স্পেসিফিকেশন এর ল্যাপটপ সাধারণত ১৫০০০ থেকে ২৫০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়।
- কোর i7ঃ ৫ থেকে ৭ বছরের পুরাতন মডেল ২৫০০০ থেকে ৪০০০০ টাকার মধ্যে হতে পারে।
RAMঃ 4gb ram এর পুরাতন ল্যাপটপ সস্তা হয়। তবে ৮ জিবি বা তার বেশি ram
থাকলে তার দাম একটু বেশি হতে পারে।
HDD/SSD: পুরাতন ল্যাপটপে যদি SSD (Solid State Drive) থাকে তবে তার দাম
আরো একটু বাড়বে SSD ড্রাইভ বেশি কার্যকরী এবং দ্রুত তাই এগুলোর দাম কিছুটা বেশি
হয়।
ব্যবহৃত কন্ডিশনঃ একটি পুরাতন ল্যাপটপে কন্ডিশন ( স্ক্রিন, ব্যাটারি,
কিবোর্ড, হার্ডওয়্যার) যদি ভাল থাকে তবে দাম একটু বেশি হতে পারে। পুরাতন
ল্যাপটপে উপরের অংশে ছোটখাটো দাগ থাকতে পারে তবে ভালো কন্ডিশন হলে দাম বাড়ে।
সেকেন্ড হ্যান্ড ল্যাপটপের দাম নতুন ল্যাপটপগুলো তুলনাই কম হলেও সাধারণত এটি অনেক
ভালো কন্ডিশনে থাকে। দাম ২০০০০ থেকে ৪০০০০ টাকার মধ্যে হতে পারে এবং সাধারণত
গ্যারান্টি পাওয়া যায়।
বয়সঃ
- তিন থেকে চার বছরের পুরাতন এই বয়সের ল্যাপটপগুলি এখনো বেশ কার্যকরী থাকে। এগুলোর দাম 20000 থেকে 30000 টাকার মধ্যে হতে পারে।
- ৫ থেকে ৭ বছরের পুরাতন তবে এখনো ব্যবহারযোগ্য এই রকম ল্যাপটপের দাম ১০০০০ থেকে ২০০০০ টাকার মধ্যে হতে পারে।
- ৭ বছরের পুরাতন বা তার বেশি এগুলোর মূল্য সাধারণত কম হয়ে যায় দাম ৫০০০ থেকে ১৫০০০ টাকার মধ্যে হতে পারে।
অপারেটিং সিস্টেমঃ কিছু পুরাতন ল্যাপটপে যদি আপনি উইন্ডোজ ৭ বা ৮ অপারেটিং
সিস্টেম দেখতে পান তবে সেগুলোর দাম কম হবে। উইন্ডোজ ১০ বা ১১ থাকলে তাহলে একটু
বেশি হতে পারে।
অফার এবং ডিসকাউন্টঃ বিশেষ সময়ে ( যেমন উৎসব বা ব্ল্যাক ফ্রাইডে) পুরাতন
ল্যাপটপের দাম কম হতে পারে। সেকেন্ড হ্যান্ড স্টোরে বিভিন্ন ডিসকাউন্ট বা অফার
পাওয়া যায় যা দামকে আরো সস্তা করে।
পুরাতন ল্যাপটপের দাম, মডেল, কন্ডিশন, স্পেসিফিকেশন এবং বাজারের সাপ্লাই অনুযায়ী
পরিবর্তিত হতে পারে। সাধারণত ১৫০০০ থেকে ৪০০০০ টাকার মধ্যে ভাল পুরাতন ল্যাপটপ
পাওয়া যাবে বলে আশা করছি। তবে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী ল্যাপটপ নির্বাচন করে দাম
যাচাই করা উচিত।
পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে করনীয় সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্নঃ পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে কি কি চেক করব?উত্তরঃ পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে কিছু বিষয় চেক করা জরুরি যেমন ল্যাপটপের বাহ্যিক অবস্থা, হার্ডওয়ার, ব্যাটারি অবস্থা, স্ক্রিন ও কিবোর্ড, সিস্টেম পারফরম্যান্স, পোর্ট ও কানেক্টিভিটি, ওয়ারেন্টি ও রিটার্ন পলিসি এগুলো নিশ্চিত হলে আপনি ভাল একটি পুরাতন ল্যাপটপ পেতে পারেন।
প্রশ্নঃ ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো?
উত্তরঃ ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য ভালো ল্যাপটপের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো- প্রসেসর Intel i5, i7 অথবা AMD Ryzen 5, 7, Ram কমপক্ষে ৮ জিবি থেকে ১৬ জিবি, এসএসডি ২৫৬ জিবি বা তার বেশি, 8 ঘন্টা বা তার বেশি ব্যাটারি লাইফ, সহজে বহণযোগ্য, wi-fi 5/6 USB পোর্ট HDMI. এই সকল বৈশিষ্ট্যগুলো যুক্ত ল্যাপটপ ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য উপযুক্ত হবে বলে আশা করছি।
প্রশ্নঃ ভালো মানের ল্যাপটপের দাম কেমন?
উত্তরঃ একটি ভালো মানের ল্যাপটপের দাম দামি ব্র্যান্ড মডেল এবং স্পেসিফিকেশন এর উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে তবে একটি ভাল মানের ল্যাপটপ কেনার জন্য আপনাকে গুনতে হতে পারে প্রায় ৩০০০০-২০০০০০+ টাকা।
প্রশ্নঃ ল্যাপটপ দিয়ে কি কি কাজ করা যায়?
উত্তরঃ বর্তমানে ল্যাপটপ বা কম্পিউটার দৈনন্দিন জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর সাহায্যে যে কোন ডকুমেন্ট তৈরি, ইন্টারনেট ব্রাউজিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, প্রোগ্রাম ফ্রিল্যান্সিং, গেমিং, ভিডিও কল বা মিটিং অনলাইন শপিং থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের কাজ করা যায়।
পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে করণীয় সম্পর্কে আমার নিজস্ব অভিমত
আজকের আর্টিকেলে পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে করণীয় বিষয়গুলো, পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে
যা জানতে হবে, পুরাতন ল্যাপটপ কেনার উপকারিতা এবং পুরাতন ল্যাপটপ কেনার অপকারিতা
এছাড়াও ওয়ারেন্টি পলিসি সার্ভিস, পুরানো ল্যাপটপ কারা কিনবেন- কারা কিনবেন না,
আসলেই পুরনো ল্যাপটপ কেনা উচিত কিনা, পুরাতন ল্যাপটপ কোথায় থেকে কিনবেন এবং
পুরনো ল্যাপটপের আনুমানিক দাম সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেবার চেষ্টা করেছি।
পরিশেষে আমি এটাই বলব যে, যদি আপনার বন্ধু বান্ধব বা নিকট আত্মীয়র কাছ থেকে
পুরাতন ল্যাপটপ ক্রয় করতে চান সেক্ষেত্রে পরীক্ষা করার জন্য অবশ্যই কিছুদিন আগে
ব্যবহার করে দেখুন। সবকিছু যদি ঠিকঠাক থাকে তবে ক্রয় করুন। এতে করে আপনার
হয়রানি কম হবে। এবং আশা করছি উপরের বিষয়গুলো ভালোভাবে বিবেচনা করে বিশেষ নজর
রেখে তারপরেই পুরাতন ল্যাপটপ ক্রয় করবেন ধন্যবাদ।
মাল্টিম্যাক্স আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।
comment url